হারিয়ে যাওয়া কষ্টের উপার্জন ফিরিয়ে মানবতা শেখালো ‘সাহায্যের ফেরিওয়ালা’
মানবতার কাছে হেরে গেল দূরত্ব। গতকাল সুদূর সুন্দরবন বাসী নিমাই বাবুর হাতে তার হারিয়ে যাওয়া ব্যাগ তুলে দিলেন নদীয়ার ইলিয়াস আলী সাহেব। ব্যাগটি পেয়ে খুশিতে কেঁদে ফেললেন নিমাই বাবু। চোখ মুছে বললেন- ” আমার গোটা পরিবার আনন্দিত। কারন এই টাকা বিগত ৩ মাস খেটে উপার্জিত।”
পেশায় রাজ মিস্ত্রি নিমাই বাবু। কিছুদিন আগে কলকাতা ধর্মতলা তারাপীঠ গামী বাসে অসাবধানতা বশতঃ হারিয়ে ফেলেন তার ব্যাগটি। সেটি পান নদীয়ার পলাশীপাড়ার বাসিন্দা ইয়ার আলি। ব্যাগে ছিল কিছু কাজের জামা কাপড়, কিছু শুকনো খাবার, কিছু কাগজ ও ১৫ হাজার মতো টাকা। ইয়ার আলি ব্যাগ টি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক খুঁজলেও খোঁজ পান না ব্যাগ মালিকের। তখন তিনি সেটি বাড়ি নিয়ে এসে ব্যাগের কাগজের মধ্যে থাকা ফোন নম্বর মতো যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। তাতেও তিনি অসফল হয়ে যোগাযোগ করেন নদীয়ার অন্যতম সমাজ সেবী সংগঠন ‘সাহায্যের ফেরিওয়ালার’ সদস্যদের সাথে।
শুরু হল এক হার না মানা লড়াই। ব্যাগের কাগজ গুলি দেখে জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম নিমাই জ্বালানি। তার বাড়ি মধুসূদনপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ছোটিশের হাট, পশ্চিমবঙ্গ। সংগঠনের পক্ষ থেকে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু হয়। অবশেষে সুন্দরবন অঞ্চলের একজন সমাজসেবী মিঠুন বাবুর সাথে যোগাযোগ করে খুঁজে পাওয়া যায় সেই ঠিকানা। যোগাযোগ করা হয় নিমাই বাবুর সাথে। গতকাল নিমাই বাবু উপযুক্ত প্রমাণ সহ আসেন নদীয়ায় ইয়ার আলি সাহেবের বাড়ি। তার সমস্ত জিনিস যত্ন সহকারে তাকে ফিরিয়ে দেন ‘সাহায্যের ফেরিওয়ালা’ সংগঠন ও ইয়ার আলি সাহেব। সমাজ সেবী সংগঠনটির অন্যতম সদস্য ওসমান গনি খান জানান – “আমরা এতো বড়ো একটা মূল্যবান কাজে সাক্ষী হতে পেরে খুবই আনন্দিত। এর জন্য আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া। সাহায্যের ফেরিওয়ালা এই ভাবে সব সময় মানুষের হৃদয়ে থাকবে।”
Discussion about this post