ক্রমেই অবলুপ্তির পথে সিঙ্গেল স্ক্রিনের দুনিয়া। আর সেই তালিকায় নাম লেখাল রক্সি। বন্ধ হয়ে গেল ধর্মতলার অন্যতম পুরনো এই সিনেমা হল। বিশ্বায়নের ছোঁয়া ক্রমেই থাবা বসিয়েছে আমাদের দৈনন্দিন প্রাত্যহিক জীবনে। আর সেই থাবার আগ্রাসন ক্রমেই গ্রাস করছে রূপোলী পর্দার ঐতিহ্যবাহী এক একটি নিদর্শন। মনে পড়ে কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত ‘সিনেমাওয়ালা’ ছবিটির কথা? কী নিদারুন ভাবে শেষ হলো শুধু একটি হল না, মাটি কামড়ে পড়ে থাকা একটি হল মালিকের জীবন। অবশ্য কলকাতার বুকে সিঙ্গেল স্ক্রিন বন্ধ হওয়া কোন নতুন ঘটনা না। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই একের পর এক বন্ধ হচ্ছিল সিঙ্গেল স্ক্রিন হলগুলি। অত্যাধুনিক মাল্টিপ্লেক্স থিয়েটার হল এবং তাদের আধুনিক পরিষেবার সঙ্গে কোনোভাবেই লড়ে যেতে পারছে না এই ঐতিহ্যবাহী হলগুলি। তাই এলিট, মেট্রোর খাতাতেই জুড়ল রক্সির নামও।
১৯৪০ সালে হলটির যাত্রা শুরু, যদিও শুরুতে সিনেমা হল হিসেবে রক্সির আত্মপ্রকাশ হয়নি। শুরুতে তা ছিল একটি অপেরা হাউস। ১৯৪১ সালে অশোক কুমার অভিনীত নয়া সংসার দিয়ে যাত্রা শুরু হলটির। তারপর এক লম্বা ইতিহাস। শোনা যায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পদধূলিতে ধন্য এই রক্সি। স্বর্ণযুগের দিনে মাসের পর মাস চলেছে এক একটি সিনেমা, আজ সেই হলটির চরম পরিনতি। রক্সি নিয়ে কানাঘুষো বহুদিন ধরেই বাজারে ঘুরছিল। শোনা যাচ্ছিল, ব্যাবসায়িক লাভ সেই অর্থে মালিক পক্ষ পাচ্ছিলেন না। ২০০৫ সালে শেষ মেরামতি হয় হলটির। তারপর পুরসভার কর বাবদ কিছু সমস্যা তৈরি হয় এবং ২০১১-তে কলকাতা পুরসভা হলটি সিজ করে দেয়। ২০১২ তে অবশ্য বিভিন্ন সংস্থা সিঙ্গেল স্ক্রিনটিকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা চালায়। যদিও শেষ রক্ষা হলো না। বৃহস্পতিবার ধর্মতলার সামনেই দেখা যায় হলের সব জিনিসপত্র বাইরে নিয়ে আসা হচ্ছে, তখনই সামনে আসে এই সত্য।
Discussion about this post