সম্প্রতি সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে শ্রীরামপুর। বাংলা নবজাগরণের সাক্ষী এই ঐতিহাসিক শহরে বন্ধ হল ৫৩ বছর পুরনো শ্রীরামপুর রেলওয়ে স্টেশন বুক স্টল। বইপ্রেমী মহল ও সাংস্কৃতিক বলয়ে ছড়িয়েছে গভীর উদ্বেগ। মূলত, বছর খানেক আগে ভারতীয় রেলের জারি নির্দেশনামায় ‘মাল্টিপারপাস স্টল’ই প্ল্যাটফর্মের বিপণী হিসেবে থাকার অনুমতি পায়। সেই নির্দেশনামায় জামা-কাপড়, খাবার ও কুটির শিল্পের পণ্য ইত্যাদির প্রস্তাব থাকলেও বাদ গিয়েছে বই। স্থানীয় বুদ্ধিজীবী মহল থেকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী তাই রেল দফতরের সিদ্ধান্তে নিন্দায় মুখর।
শ্রীরামপুর রেলওয়ে স্টেশন বুক স্টল দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর স্থানীয় মানুষদের নিরলস পরিষেবা দিয়েছে বলে জানান দোকানের বর্তমান কর্ণধার অভিষেক জৈন। চোখে মুখ হতাশা ও শোকের ছাপ স্পষ্ট। ঐতিহ্যশালী দোকানের পাকাপাকি উঠে যাওয়ার খবর সম্প্রচারের জেরে গর্জে উঠেছেন শ্রীরামপুরের বিপুল বইপ্রেমী মানুষ। ইতিমধ্যেই তৈরী হয়েছে শক্তিশালী জনমত। সমাজকর্মী গৌতম সরকার কড়া ভাষায় ঘটনার নিন্দা করে বলেন- “বুক স্টল সরিয়ে দেওয়া সংস্কৃতির মূলে কুঠারাঘাত।” স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশিষ্ট থিয়েটার কর্মী বিভাস গুপ্ত ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলেন- “রেল বিভাগের নির্বোধ হঠকারিতা বৌদ্ধিক জগতেরই মানহানি।”
শ্রীরামপুর এলাকার একমাত্র বইয়ের স্টল বাঁচাতে তাই প্রতিরোধের মঞ্চ এক প্রকার তৈরী। আগামী শনিবার আয়োজন করা হয়েছে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভার। স্বাক্ষর সংগ্রহের প্রতিলিপি পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ম্যানেজার, ডিআরএম, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ও শ্রীরামপুর স্টেশনের স্টেশন মাস্টারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বাঁচাতে এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া ও কর্মকান্ড নিঃসন্দেহে ভরসা জোগায়। এখন তাকিয়ে থাকা আগামীর দিকে। অবশ্য গণ স্বাক্ষরই শেষ কথা নয়, বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রেল কর্তৃপক্ষের দিক থেকে ইতিবাচক বার্তা না এলে রয়েছে বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ভাবতেও পিছু হঠবেন না শহরের সাধারণ মানুষ।







































Discussion about this post