১৯৯৭ সালে রিলিজ হওয়া ‘টাইটানিক’ সিনেমাটি আমরা মোটামুটি সবাই দেখেছি। জেমস ক্যামেরন পরিচালিত সিনেমাটি ১৯১২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার বাস্তব ঘটনার অনুকরণে তৈরি। সিনেমাটিতে দেখানো হয় একটি বড় হিমশৈলের সাথে ধাক্কা লাগার ফলে টাইটানিক ডুবে যায়। কিন্তু আদৌ কি সেটা সত্যি? এই জাহাজডুবির কারণ হিসেবে শুধুমাত্র হিমশৈলকেই মেনে নিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। কারণ টাইটানিক বানানো হয়েছিল এমনভাবে তাতে কোন অবস্থাতেই সেটি ডুবে না যায়। সদ্য প্রকাশিত এক রিসার্চ পেপারে এই ঘটনার পিছনে অন্য এক সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।
মিলা জেনকোভা নামে এক গবেষকের মতে, টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পেছনে সৌরঝড়ের ভূমিকা আছে। সৌরঝড়ে সূর্যের ওপরের তলের তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়, তার ফলে স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এর সঙ্গে টাইটানিক ডুবে যাওয়ার সম্পর্ক কি?
জিনকোভার দাবি, সৌরঝড় ও তার সাথে ঘটে যাওয়া জিওম্যাগনেটিক ঝড় টাইটানিক-ডুবির অন্যতম কারণ। ‘ওয়েদার’ জার্নালে প্রকাশিত তাঁর এক রিপোর্ট অনুযায়ী,১৯১২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনার সময় শিপটাইম ছিল ২৩৪০। জাহাজের চতুর্থ অফিসার জোসেফ বক্সহেল তখন এসওএস পয়েন্টে ছিলেন। যেখানে জাহাজ থাকার কথা তার থেকে ১৩ নটিক্যাল মাইল দূরে টাইটানিকের অবস্থান ছিল। জাহাজ ডুবে যাওয়ার মূহুর্তে তখন এসওএস বার্তা পাঠানো হয়, সেই সময় উদ্ধারকারী জাহাজ কার্পেথিয়া, টাইটানিকের যে অঞ্চলে থাকার কথা সেই অঞ্চলের বার্তা পায়। তবুও উদ্ধারকারী জাহাজের ক্যাপ্টেনের বুদ্ধিমত্তায় টাইটানিকে থাকা বেশ কিছু মানুষের জীবন বেঁচে যায়। যোগাযোগের এই ভুলের কারণ হিসেবে জিনকোভা সেই সূর্যে ঘটা সৌরঝড়কেই দায়ী করেন।
সৌরঝড় ও জিওম্যাগনেটিক ঝড় উভয়েই টাইটানিকের নেভিগেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। বিশেষ করে এই ঝড়ের কারণেই জাহাজের চুম্বকীয় কম্পাস ঠিকঠাক কাজ করতে পারেনি। আর যার ফলেই টাইটানিক দিক ভুল করে হিমশৈলে ধাক্কা মারে। সরকারী রিপোর্টে অবশ্য এই দূর্ঘটনার দায় জাহাজের নতুন কর্মীদের ওপর চাপানো হয়। যিনি জাহাজের রেডিও যোগাযোগের দায়িত্বে ছিলেন তিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে সার্কিট নষ্ট করে ফেলেন। জেনকোভা অবশ্য জানিয়েছেন, সেই সময় সৌরঝড় নিয়ে প্রাথমিক ধারণা ছিল কেবলমাত্র। যার ফলে জাহাজের ঐ কর্মীদের পক্ষে সিগন্যাল এবং নেভিগেশনের এই অসুবিধার সঙ্গে সঙ্গে কিছু করা ওঠাও সম্ভব ছিল না।
Discussion about this post