বড়দিন মানেই আনন্দ, উৎসব। চারদিকে আলো, সাজ, কেক আর উপহারের ভিড়। গির্জার প্রার্থনা থেকে শুরু করে রাস্তার আলোকসজ্জা, বাড়ির অন্দরসজ্জা সবেতেই উৎসবের ছোঁয়া। কিন্তু বড়দিন বলতেই শুধু যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন নয়, মনে ভেসে ওঠে আরেকটি মুখ। স্লেজে চড়ে, ঘণ্টা বাজিয়ে, লাল পোশাকের বিশালবপু বৃদ্ধ। সান্টা ক্লজ, যাঁর অপেক্ষায় থাকে পৃথিবীর সব শিশু। দুষ্টুমি না করে ভালো হয়ে থাকলে, রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে তিনি দিয়ে যান তাদের পছন্দের উপহার। আজ যে রূপে আমরা সান্টাকে দেখি, তিনি কিন্তু সবসময় এমন ছিলেন না। তাঁর আজকের এই চেহারা প্রথম শিলমোহর পেয়েছিল কোকাকোলার বিজ্ঞাপনে!
শুরুতে সান্টার চেহারা ছিল অনেকটাই আলাদা। পুরনো স্কেচ ও ছবিতে তিনি শীর্ণকায়। তাঁকে দেখা যায় কখনও নীল, কখনও সবুজ কখনও বা হলুদ পোশাকে। তাঁর বাড়িও তখন মেরু অঞ্চলে নয়। বদল আসতে শুরু করে লেখালিখির মাধ্যমে। ১৮২৩ সালে প্রকাশিত একটি কবিতায় প্রথম আধুনিক সান্টার ইঙ্গিত মেলে। গোলগাল চেহারা, উজ্জ্বল চোখ, সাদা দাড়ি আর উপহারে ভরা থলি। তবে তখনও লাল পোশাক স্থায়ী হয়নি।
শেষমেশ সান্টার চেহারা চূড়ান্ত রূপ পেল বিশ শতকের শুরুতে। ১৯৩১ সালে কোকাকোলার বিজ্ঞাপনে শিল্পী হ্যাডন সান্ডব্লম যে সান্টাকে আঁকলেন, তিনিই হয়ে উঠলেন বিশ্বজোড়া পরিচিত মুখ। লাল জোব্বা, সাদা দাড়ি, হাসিমুখ। এই রূপটাই মানুষের মনে গেঁথে গেল। তারপর থেকে সান্টা আর বদলাননি। প্রতি বছর ক্রিসমাস ইভে, গল্প আর স্বপ্নের ভেতর দিয়ে, ঠিক এই রূপেই তিনি ফিরে আসেন শিশুদের আনন্দ দিতে।
বাইবেলে তাঁর উল্লেখ নেই, কারণ সান্টার উৎস যিশুর জন্মের প্রায় তিনশো বছর পরে। সেই সময়ে এক খ্রিস্টান ধর্মগুরু সেন্ট নিকোলাস ছিলেন দরিদ্র ও অসহায়দের পরম বন্ধু। বিশেষ করে শিশুদের তিনি ভীষণ ভালোবাসতেন। নিঃশব্দে উপহার, অর্থ ও সাহায্য পৌঁছে দিতেন যাঁদের প্রয়োজন। ঐতিহাসিকদের মতে, এই সেন্ট নিকোলাসের মানবিক চরিত্রই ধীরে ধীরে রূপ নেয় সান্টা ক্লজের কল্পনায়।







































Discussion about this post