বিশ্বের দ্বিতীয় এবং এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রস্তাবিত কয়লা খনি দেউচা-পাচামিতে টানা তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে খনন কাজ। স্থানীয় আদিবাসীরা নিজেদের ভিটেমাটি ছাড়তে রাজি নন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আদিবাসী নেতাদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বোলপুর থেকে দেউচা-পাচামিতে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখেও পড়েছেন আদিবাসী নেতারা। তাঁদের থানায় ডেকে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।

“নিজেদের ভিটেমাটি ছাড়ব না, কয়লা খনি করতে দেব না”—এই দাবিতে দেউচা-পাঁচামিতে বিক্ষোভে নেমেছেন আদিবাসী মহিলারা। সাগরবাঁধি গ্রামের মহিলারা কর্মরত JCB ও ডাম্পার চালকদের তাড়িয়ে দিয়ে খনি এলাকায় চড়কা কেটে পথ আটকে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় যান জেলাশাসক। দেউচা-পাঁচামিতে ৩৪০০ একরজুড়ে ১২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা ও ৬৭৫ মিলিয়ন টন ব্যাসল্ট শিলাস্তর রয়েছে। ২০টি গ্রামে প্রায় ২১ হাজার মানুষের বসবাস থাকায় বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল ও জলাভূমি রক্ষার দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।
৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খনন কাজ শুরুর ঘোষণা করেছিলেন। প্রথম অবস্থায় ভূমি পুজোয় বাধা পেয়ে প্রশাসন গোপনে কাজ শুরু করলেও ৭ ফেব্রুয়ারি বিশাল পুলিশ ঘেরাটোপে সরাসরি মাটি কাটার কাজ শুরু হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সাগরবাঁধি-সহ চারটি গ্রামের আদিবাসী মহিলারা চাঁদা গ্রামের প্রজেক্ট এলাকায় গিয়ে খনন বন্ধ করে দেন। তাঁদের এই আন্দোলন অবশ্য নতুন নয়।
এই সমস্যা সমাধানে বৈঠকে বসতে চলেছে রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। আলোচনার মাধ্যমে সহমতের ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন স্থানীয়দের বোঝানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, অনেকেই মনে করছেন প্রশাসন বোঝানো নয়, মানুষকে ভয় দেখাতেই ব্যস্ত। আদিবাসী মানুষের মুখ বন্ধ করার জন্যেই তারা উঠেপড়ে লেগেছে।
Discussion about this post