মণিপুরে জাতিগত এবং রাজনৈতিক সংঘাত চলছে প্রায় দুই বছর ধরে। এই অবস্থায় অসংখ্য সাধারণ মানুষকে নিজের ঘরছাড়া, গ্রামছাড়া হতে হয়েছে। কেমন আছেন তাঁরা? কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন তাঁরা? খাওয়াপরার বাইরে তাঁদের নিজস্ব কোনো জীবন আছে কী? সম্ভবত এর উত্তর হবে, “না”। কারণ, এই গৃহচ্যুত মানুষগুলি বর্তমানে সবজি চাষ করে সাময়িক মানসিক শান্তি খুঁজে নিচ্ছেন। ইম্ফল পূর্ব জেলার সাজিওয়াতে(Sajiwa) অবস্থিত বিশাল প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড আবাসন কমপ্লেক্সে বসবাসকারী অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতরা আশেপাশের উর্বর জমি ব্যবহার করে মৌসুমী সবজি চাষ করছেন।
এই মানুষগুলির প্রায় সকলেই সংঘাতের আগে নিজের নিজের গ্রামে ধান ও সবজি চাষ করতেন। এখন, তাঁরা কেবল বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজ করছেন, কিন্তু অনেকেই কাজ পাচ্ছেন না। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ইয়েংখুমানসহ আরও বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। বেকার বসে থাকলে খাওয়া জুটবে না, তাই স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে চাষাবাদের অনুমতি চাইছেন তাঁরা। অনুমতি মিলেছেও। নিজেরাই কৃষি বিভাগের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে এবং সার কিনে কাজ শুরু করেছেন। এঁদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে জমি।
সাজিওয়ায় ২০০টি প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড বাড়িতে প্রায় ৭০০ জন বাসিন্দা বসবাস করছেন। আনুমানিক ১৫০ জন বাসিন্দা টমেটো, বাঁধাকপি ও আলু চাষ করছেন। এই কৃষিকাজের মধ্যে দিয়ে তাঁরা এক ধরনের অর্জনের অনুভূতি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এই কৃষিকাজ শুধুমাত্র উৎপাদন হয়েই থেকে যায়নি, সকলে মিলে কাজে এই অংশগ্রহণ তাঁদের সাময়িকভাবে আনন্দ দিচ্ছে। অন্যদিকে, অনেকে সেইভাবে খুশি হতেও পারছেন না। তাঁরা নিজেদের গ্রামে ফিরে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান। কিন্তু এখন ছোট ছোট কাজের মধ্যে সুখ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা, যার মধ্যে এই চাষাবাদ অন্যতম।
চিত্রঋণঃ অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অফ দ্য ডিপারট্মেন্ট অফ এগ্রিকালচার (মণিপুর সরকার)
Discussion about this post