মাছবাজার! নাম শুনলেই নাকের কাছে ঝাপটা মারে আঁশটে গন্ধ। কিন্তু এক আজব মাছ বাজারের কথা শুনলে আপনার চোখ উঠবে কপালে। দেড় কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে শুধুই মাছের দোকান। কুমিল্লা নগরীর পদুয়ার বাজার। কুমিল্লা- নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই এই বাজারটি। প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার নিয়মিত বসে এ বাজার। দেশি কই থেকে শুরু করে টাকি, শোল, টেংরা, চাষের রুই, কাতলা, মৃগেল, সমুদ্রের চাপিলা, লইট্যা, সুরমা, কোরাল, টুনা মাছ প্রায় সবই পাওয়া যায়। যাতায়াত সহজ, দামও নাগালের মধ্যে। তাজা মাছ পেয়ে বেজায় খুশি হন ক্রেতারা। শোনা যায় এ মাছ বাজার প্রায় একশো বছরের পুরনো। তবে শেষ তিরিশ বছর ধরে এ বাজার জমে উঠেছে দারুণভাবে।
প্রতিদিন প্রায় ২৫০টি দোকান বসে গোটা বাজার জুড়ে। সে যেন মাছের মেলা বসেছে! দৈনিক বিক্রি হয় আড়াই কোটি টাকারও বেশি মাছ। তার মধ্যে বেশি বিক্রি হয় রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ, মৃগেল, গ্রাসকার্প, সিলভার কার্প, বিগহেড, কমনকার্প জাতীয় মাছগুলো । বাজারে ২০ শতাংশ ইলিশ, ১০ শতাংশ দেশি ও ২০ শতাংশ সামুদ্রিক মাছ মিলেমিশে ভরে ওঠে বাজার। রুই, কাতলা, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মাছগুলো আসে দাউদকান্দি, মেঘনা ও তিতাস উপজেলার প্লাবন ভূমি থেকে। ইলিশের ঠিকানা চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও ঢাকা। আবার সামুদ্রিক মাছের বেশিরভাগ আসে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে। তা ছাড়া বিক্রি হয় সামুদ্রিক কাঁকড়াও।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, তিন সারিতে বসেছে মাছ ব্যবসায়ীরা। তাজা বর্ণিল মাছ লাফাচ্ছে বিক্রেতার কাছে। বড় সাইজের মাছের পাশে জমে বেশি ভিড়। ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁক ডাকে গোটা বাজার সরগরম হয়ে ওঠে। মিয়াবাজার, চৌয়ারা, কালিকাপুর, লালমাই ও পিপুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার শৌখিন ক্রেতারা মাছ কিনতে আসেন এখানে। রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে মাছ কিনে নিয়ে যান অনেকেই। কোনো ব্যবসায়ীর লাখ টাকার ওপরেও এক দিনে বিক্রয় হয় বলে জানা যায়। এখন ফোর লেনের কাজ চলায় বাজারটি কিছুটা সংকীর্ণ হয়েছে। তবে এটি হল কুমিল্লার সর্ববৃহৎ মাছ বাজার।
চিত্র ঋণ – আশিকুর রহমান সোহাগ
Discussion about this post