সেই রাতটি ছিলো ভয়ানক এক কালোরাত। তবে সব খারাপের পরেই সবসময় ভালোর সূচনা হয়। অনেকটা সেভাবেই হয়েছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা। মার্চের ২৫ তারিখ ভয়াল কালরত্রির পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে পুরো দেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে। লক্ষ্য নিজেদের সমস্তটা দিয়ে যুদ্ধ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করা। তাদের এই চেষ্টায় প্রথম দফায় চূড়ান্ত সাফল্য লাভ করেন বাংলাদেশের পাবনা জেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাবনায় আক্রমণকারী ১৫০ জন পাকসেনার প্রত্যেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। হানাদার বাহিনীর প্রত্যেকে নিহত হয় লেঃ কর্নেল কাজী নুরুজ্জামানের সেনাবাহিনীর কাছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেন আমজাদ হোসেন, আব্দুর রব বগা মিয়া, আমিন উদ্দিন, গোলাম আলী কাদেরী, বেবী ইসলাম, ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।
তবে শুরুতেই পাবনাবাসী জয় লাভ করলেও পাক হানাদার বাহিনী আবার বেশি অস্ত্র এবং লোকবল নিয়ে পাবনা আক্রমণ করে। জল-স্থল এমনকি আকাশ পথেও তারা আক্রমণ চালায়। ১৬ ডিসেম্বর পাকসেনাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পনের পর বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। তবে এরপরেও শত্রুমুক্ত হয় না পাবনা। মুক্তিবাহিনীর কাছে তারা আত্মসমর্পণ করতে নারাজ। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রাখে তারা। অবশেষে বিজয় লাভের দু’দিন পরে ১৮ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন নন্দ পাবনাতে যান এবং তার কাছেই নতি স্বীকার করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তাই ১৮ ডিসেম্বর পাবনায় শত্রুমুক্ত দিবস পালন করা হয়।
চিত্র ঋণ – ডেইলি স্টার
Discussion about this post