সমুদ্রের পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার নাম উঠলেই তালিকায় প্রথম যে নামটা থাকে তা হল দীঘা। আর একটু দূরে যেতে মন করলে পুরী তো রয়েইছে। কিন্তু এখন বাঙালির দী-পু-দা’র দৌরাত্ম্য বেশ অনেকটাই কমেছে। কারণ জায়গাগুলিতে প্রায় সারাবছরই পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লেগেই রয়েছে। তবু যেটুকু দৌরাত্ম্য রয়েছে সেটাও আরও কিছু গুণ বেড়ে যায় যদি কাছাকাছি জায়গাতেই পেয়ে যাওয়া যায় অফবিটের খোঁজ। পুরীর কাছাকাছি তেমনই একটি জায়গা লুকিয়ে আছে, যার নাম হল তাপাং। পুরীর একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম এক ঠিকানা। এটি অবস্থিত ওড়িশার খুরদা জেলার মধ্যে।
পুরী থেকে মাত্র ৫৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে মন ভালো করা এই জায়গাটি। নিজের দেশে থেকে বিদেশি প্রকৃতির সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে উপস্থিত তাপাং। যেখানে গেলে মনে হবে, আপনি পৌঁছে গিয়েছেন একেবারে স্পেনের খাঁড়ির মতো জায়গায়। এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হল পাথুরে খাদানের মাঝে নীল জলের হ্রদ। এই হ্রদ তৈরি হয়েছিল পাথর কেটে তৈরি করার সময়। আসলে বাড়ি তৈরির সময় যে স্টোন চিপস ব্যবহার করা হয়, তা এখানেই খুঁড়ে তৈরি করা হয়। ফলে জন্ম হয় একটি খাদানের। তারপর প্রকৃতির মায়ায় বর্ষার জল জমে জমে তৈরি হয়েছে নীল জলের হ্রদ।
তবে এখনও পর্যটকদের মধ্যে খুব একটা পরিচিতি পায়নি এই জায়গাটি। পাথুরে জমির মধ্যে এমন একটি সুন্দর হ্রদ পুরীর কাছেই রয়েছে, অনেকেই জানেন না সেকথা। স্থানীয়রা অবশ্য এখানে শীতে পিকনিক করতে আসেন। বর্ষাকালে এই হ্রদ ভরে ওঠায় প্রকৃতির সৌন্দর্য্য বেড়ে যায় আরও দ্বিগুণ।আগে ওড়িশা সরকার এখানে পর্যটকদের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ২০২২ সাল থেকে এটি হয়ে উঠেছে নিখাদ সৌন্দর্য্য মাখা ঘোরার জায়গা। পুরী থেকে খুব সহজেই আসা যায় এখানে। পুরী গিয়ে সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন তাপাং। এছাড়াও খুরদা স্টেশনে নেমে সেখান থেকেও যাওয়া যায়। পথে পড়বে দয়া নদী, যে নদীটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক এক হিংস্রতার গল্প। জানা যায়, কলিঙ্গ যুদ্ধের সময় এই দয়া নদীর জল রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল। তাই এবার পুরীর সমুদ্রের পাশাপাশি উপভোগ করুন নীল জলের হ্রদের সৌন্দর্যও।
Discussion about this post