শরীরের চালনা শক্তি যেমন খাদ্য তেমনি মনের খোরাক ভ্রমণ। শীতকাল মানেই ঘোরাঘুরির মরসুম। দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততার মধ্যে এক ঘেঁয়েমি কাটিয়ে তোলার জন্য কাছেপিঠে কোথাও ঘুরে আসতে পারলে দারুণ হয়। আর তাই জন্যই অনেকেই ছুটি কাটাতে যান পাহাড়ে, আবার কেউবা সমুদ্রে। শীতের হিমেল পরশে সজীব হয়ে উঠে পার্বত্য প্রকৃতি। আবার অন্যদিকে শীতের ছুটিতে সমুদ্র দর্শনও হতে পারে ভ্রমণের অন্যতম গন্তব্য। কিন্তু বহু বাঙালির কাছে ঘুরতে যাওয়া মানেই সেই একঘেয়ে দীঘা, পুরী, দার্জিলিং। এরও বাইরে অনেক স্থান রয়েছে, কিন্তু সেই সমস্ত জায়গায় আর তেমন যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাই আজকে আপনাদের জানাবো অফবিট সমুদ্র সৈকত আর্যপল্লী সম্পর্কে। চলুন জেনে নিই কেমন সেই জায়গা। কীভাবেই বা যাবেন সেখানে?
আপনি কি শহরের একঘেয়ে ব্যস্ত জীবন থেকে ক’দিনের জন্য পালানোর আর্দশ খুঁজছেন? তাহলে আপনার শীতের ছুটি কাটানোর আদর্শ গন্তব্যস্থল হতে পারে ব্রহ্মপুর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে অবস্থিত আর্যপল্লী সমুদ্র সৈকত। এটি ওড়িশার গঞ্জাম জেলার অন্তর্গত। উড়িষ্যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করার এক অপূর্ব স্থান হল বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত এই ভার্জিন সি-বিচটি। এটি রুশিকুল্যা নদী এবং বঙ্গোপসাগরের সঙ্গমস্থল। এখানকার গভীর নীল সমুদ্র, সোনালী বালুকাময় সমুদ্র সৈকত এবং স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে। এছাড়াও এই সমুদ্র সৈকতের সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত আপনার মনে এক জাদুকরী মন্ত্রের সাড়া জাগাবে।
এটি ওড়িশার একটি সুন্দর, পরিপাটি এবং পরিস্কার সমুদ্র সৈকত। এখানে সমুদ্র সৈকতের দিকটি বড় পাথর দিয়ে ঘেরা যেখানে বসে আপনি সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। যারা অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী তাদের জন্য রয়েছে সমুদ্রের উত্তাল জলে সাঁতার কাটা ও সার্ফিং করার সুযোগ। এখানে একটি মৎস্য বন্দরও রয়েছে, যারা সামুদ্রিক খাবার খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য উপযুক্ত স্থান এটি। সমুদ্র সৈকতের কাছে পর্যটকদের জন্য অনেক ছোট-বড় হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। আর্যপল্লী সমুদ্র সৈকতের কাছেই রয়েছে জেলেদের গ্রাম। সেখানে গিয়ে আপনি গ্রামের মৎস্যজীবীদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। সঙ্গে তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সম্পর্কেও জানতে পারেন। বালি খনিজ প্রকল্প এখানকার অন্যতম আরেকটি আকর্ষণ। আর্যপল্লীতে রয়েছে জনপ্রিয় কিছু পর্যটক আকর্ষণকারী স্থান যেমন – জগদা দুর্গ, সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির, তারাতারিণী ও নারায়ণী মন্দির, পোটাগাদা দুর্গ ইত্যাদি। আবার যারা ঝরনা পছন্দ করেন তাদের জন্যও রয়েছে রম্ভা লেক, বারিয়াপাথরা জলপ্রপাত, ঘুসুরিডাঙ্গা জলপ্রপাত, টাম্পারা লেক।
সমুদ্র সৈকতে সবুজ ক্যাসুরিনা বাগানের মাঝে প্রকৃতির কোলে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য সেরা জায়গা হল আর্যপল্লী। আর্যপল্লী বেড়াতে যাওয়ার সেরা সময় হল অক্টোবর থেকে জুন। এখানকার নিকটতম বিমানবন্দর হল ভুবনেশ্বরে, যা আর্যপল্লী থেকে প্রায় ১৫৫ কিমি দূরে অবস্থিত। আর্যপল্লী সমুদ্র সৈকতে পৌঁছনোর জন্য ভ্রমণকারীরা নিকটবর্তী ছত্রপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্যাক্সি কিংবা অটো রিকশা ভাড়া করে নিতে পারেন।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – শক্তি নন্দা
Discussion about this post