এই দুরারোগ্য রোগের কোনও সঠিক ওষুধ নেই, নেই কোনও স্থায়ী নিরাময়। তবে সেই রোগ দূর করতে কানাডার রিসার্চ বায়োইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি সেন্টার আবিষ্কার করলো ‘ন্যানোবট’। এবারে ন্যানোটেকনোলজিতে ক্যান্সার কোষে সরাসরি পৌঁছে যাবে ওষুধ। এমন বিশাল সাফল্য অর্জন যেন সমগ্র বিজ্ঞান মহলে ছড়িয়ে দিয়েছে আশার প্রদীপ। ন্যানোবট কী, তা জানার উদ্বিগ্নতা অনেক। তবে আসুন জেনে নেওয়া যাক কী এই ন্যানোবট!
বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধি সরানোর জন্য ন্যানোটেকনোলজির নানান প্রক্রিয়া নিয়ে বায়োফিজিক্স গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। আর তারাই আবিষ্কার করল এই ন্যানোবট। এটিকে মূলত সরবরাহকারী হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ছোট ছোট ক্যান্সার কোষে সরাসরি ওষুধ পৌঁছানো দুষ্কর। আর এই ন্যানোবটে থাকবে ওষুধ, যা এর মাধ্যমে সরাসরি পৌঁছে যাবে টিউমার কোষে। ঢেলে দেবে ওষুধ। ক্ষতিগ্রস্থ কোষগুলো দ্রুত নিরাময় পাবে।
বহুকাল আগে থেকেই ন্যানো টেকনোলজির মাধ্যমে বহু রোগ নিরাময়ের উপায় আবিষ্কার হয়েছে। এটি হল সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম উপাদান যা শরীরের একদম ক্ষতিগ্রস্থ কোষে পৌঁছে সেই সমস্যার সমাধান ঘটায়। আর এই টেকনোলজিকেই হাতিয়ার বানিয়ে প্রতিরোধ করা হবে ক্যান্সার। শুধু ক্যান্সার নয়, আরও বহু রোগ সারাবে এই রোবট। এটি তৈরি করা হচ্ছে ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) দিয়ে। যার উপাদান প্রাণী বা উদ্ভিদ প্রোটিন থেকে বানানোর চেষ্টা চলছে। বিজ্ঞানের ভাষায় এই ন্যানোবটকে বলা হয় মলিকিউলার ট্রান্সপোর্টার। কারণ এদের কাজ ওষুধ পৌঁছে দেওয়া একদম আক্রান্ত কোষে। এই ক্ষুদ্র বটের নাম দেওয়া হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ড্রাগ ট্রান্সপোর্টার।
বিজ্ঞানীদের মতে, ওষুধ খেলে সেই ওষুধ ক্ষতিগ্রস্থ কোষে পৌঁছানোর আগে সারা শরীর ঘুরে বেড়ায়। কাজেই নষ্ট হয় ডোজের পরিমাণ। আর ক্ষতিগ্রস্থ কোষে পৌঁছায় অল্প পরিমাণ ওষুধ। ফলত বারেবারে খাওয়াতে হয় ওষুধ, বাড়াতে হয় ডোজের পরিমাণ। এর জন্য বেড়ে যায় ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। সে ক্ষেত্রে যদি ন্যানোবট ওষুধ পৌঁছে দেয়, তবে ওষুধের পুরোটাই পৌঁছে যাবে নির্দিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত কোষে। নষ্ট হবে না ডোজের পরিমাণ অথবা বারেবারে খাওয়াতে হবে না ওষুধ। এই ন্যানোবট ম্যালেরিয়ার ওষুধ কুইনাইন, ব্রেস্ট ক্যানসার এবং লিউকেমিয়ার ওষুধ ডক্সোরুবিসিনের জন্য তৈরি করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। ইঁদুরের ওপর এই পরীক্ষা সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাই এখন মানুষের ওপর এর পরীক্ষা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
Discussion about this post