আজ যেখানে এই নাখোদা মসজিদ, সেখানে কিন্তু আগেও একটা মসজিদ ছিল, কিন্তু সেটা ছিল অনেকটাই ছোট। আগের সেই মসজিদের জায়গায় এই বিশালাকার মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ সেপ্টেম্বর। কাজ শেষ হতে বেশ সময় লাগে, এবং সম্পূর্ণ নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে। কচ্ছি মেমন জামাত সম্প্রদায়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটিতে, এক বিখ্যাত ধনবান ব্যবসায়ী হাজি নুর মহম্মদ জাকারিয়া (এনার নামেই জাকারিয়া স্ট্রীট), মতােয়ালী পদে নিযুক্ত হয়ে মসজিদটির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণে ব্রতী হন। এই মসজিদের সঙ্গে একটি মাদ্রাসাও প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বিশালাকার এই মসজিদটির স্থাপত্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল আকবরের সমাধিসৌধ সিকান্দারের আদলে। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের দু’টি ১৫১ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন মিনার ছাড়াও, গম্বুজের চারদিকে রয়েছে আরও পঁচিশটি ছোট আকৃতির মিনার। মসজিদের প্রবেশপথটি দুই খিলানযুক্ত, যা ঢােলপুর থেকে আনানো লাল বেলেপাথর দিয়ে বানানো। এর আকৃতি বিখ্যাত ফতেপুর সিক্রির বুলন্দ দরজার মতো। মসজিদের ভিতরে বিশেষভাবে তাজমহলের অলংকরণ সদৃশ নানাবিধ নকশা খােদাই করা হয়েছে মূল্যবান মার্বেল পাথরে। চারতলা মসজিদটিতে সাদা মার্বেল ও লাল বেলে পাথরের সমন্বয়ে যে স্থাপত্য ও ভাস্কর্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তা স্মরণ করিয়ে দেয় মােগল স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের অনুরূপ সজ্জার কথা।
উজু করার জায়গাটিও খুব সুন্দর। আগে ফোয়ারাগুলো চলতো, এখন তা অচল। তা এখন ব্যবহার হয় পায়রাকে খাওয়ানোর পাত্র হিসেবে। এখানে দর্শনার্থী হিসেবে মেয়েদের প্রবেশাধিকার আছে। তবে হ্যাঁ, সকালের দিকে গেলেই ভালো হয় বেশি।
চিত্র ঋণ – দীপাঞ্জন ঘোষ, সুমিত সুরাই, সাম্যব্রত
Discussion about this post