রাস যাত্রা সনাতন সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। কথিত আছে, ভগবান কৃষ্ণ কার্তিক মাসের এই পূর্ণিমাতেই বৃন্দাবনে রাধা-সহ সখীদের রাসলীলায় মেতেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে নদিয়া-সহ বিভিন্ন জেলা এবং ওড়িশা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে রাস পূর্ণিমা পালিত হলেও, নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী রাস তাদের মধ্যে অন্যতম। টানা দু’বছরের বিধি নিষেধ কাটিয়ে নবদ্বীপের রাস আবার স্বমহিমায় ফিরলেও এই বছরে প্রশাসনের বাজনা সহ নবমী বন্ধের সিদ্ধান্তে বেশ কিছুটা অখুশি নবদ্বীপবাসী।
নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী নবমীর সাথে মিশে আছে এক প্রাচীন ইতিহাস। জানা যায়, এক সময় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নবদ্বীপের পোড়ামাতলায় সমস্ত পট বারোয়ারীকে আহ্বান জানাতেন। পরবর্তীকালে মাটির মূর্তি রূপ তৈরী শুরু হলে, প্রত্যেক বারোয়ারি একইভাবে তাদের প্রতিমা নিয়ে পোড়ামা তলায় হাজির হতেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাদের মধ্যে সেরা প্রতিমা বেছে নিয়ে পুরস্কৃত করতেন। তবে সময়ের সাথে বদলেছে নিয়ম। বর্তমানে রাস পূর্ণিমার দিন প্রতি বারোয়ারি বাজনা সহযোগে সিঙা সহ পূজা দিতে আসেন নবদ্বীপের পোড়ামা মন্দিরের।
করোনার কারণে গত দু’বছর এই রীতি পালন করা সম্ভব হয়নি। তার বদলে এই দুই বছরে বাজনা ছাড়া অল্প সংখ্যক সদস্যদের সাথে মা পোড়ামার পুজো দেয় নবদ্বীপের প্রায় সমস্ত বারোয়ারি। কিন্তু বর্তমানে সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ফলে, এই বছর বাজনা সহ নবমীর প্রশাসনিক সম্মতির আশা করেছিলেন সারা নবদ্বীপবাসী। কিন্তু প্রশাসনের তরফে জানানো হয় এইবারেও বাজনা সহ নবমীর অনুমতি দেওয়া হবে না। নবদ্বীপ থানার আইসি অভিজিৎ চ্যাটার্জী জানান, “এই বছর নবমী বাজনা সহকারে করা যাবে না। তার বদলে পাঁচ জন সদস্য সর্বোচ্চ একটি ঢাক সহকারে সমস্ত বারোয়ারি পোড়ামা তলার পুজো দিতে পারবেন।”
Discussion about this post