কথাতেই আছে ‘সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার’। নতুন বছরে বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম এক গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল পৌষ পার্বণ বা মকর সংক্রান্তি। আর এই উৎসবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগরদ্বীপে প্রত্যেক বছর আয়োজন হয় গঙ্গাসাগর মেলা। এই বছরেও তাই মেলার আয়োজন চলছে জোরকদমে। ভক্তরাও গঙ্গাসাগর মেলা বলতে এক বাক্যে সাগরদ্বীপের মেলাকেই জানেন। তবে প্রতি বছর সাগর মেলা শুরুর আগে বাবুঘাটে গঙ্গার ধারে সাধু সমাগমের কথাও আমাদের অজানা নয়। কিন্তু কলকাতার যমজ শহর হাওড়ার এক গ্রামের ‘মিনি গঙ্গাসাগর’ মেলার কথা শুনেছেন?
আজ্ঞে হ্যাঁ, মিনি গঙ্গাসাগর মেলাই বটে! সাগর দ্বীপে মেলা শুরুর কদিন আগে হাওড়ার মাকড়দহ ২ নং পঞ্চায়েতের লক্ষণপুর গ্রামে বসে এই মেলা। উদ্যোক্তারা হলেন হাওড়ার লক্ষ্মণপুর গ্রামের তারা মা মন্দির কমিটির সদস্যরা৷ তাদের তত্ত্বাবধানেই বিগত প্রায় তিন দশক ধরে ২৫ শে ডিসেম্বর অর্থাৎ বড়দিনে আয়োজিত হয়ে চলেছে মেলাটি। এবছরও অন্যথা হয়নি সেই প্রথার। সারাদেশের ৫১টি শক্তিপীঠ থেকে প্রায় ১৫০ জন সাধুর ভিড় জমে লক্ষণপুরের মেলায়। ভাবা যায়! কেদারনাথ, সুরাত, কামাখ্যা-সহ আরও অন্যান্য তীর্থক্ষেত্র থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধু-সন্ন্যাসীরা এসে সাময়িক ঘাঁটি গেড়ে বসেন এখানে। শুধু তাই নয়,নাগা বাবারাও ভিড় জমান সেখানে। খানিকটা গঙ্গাসাগর মেলার ধাঁচেই থাকেন সাধুরা, এক সঙ্গে হয় রান্নাও।
মা তারা মন্দির কমিটির সদস্যদের দাবি, এটি হল পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম সাধু মেলা। জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছরে ভক্তদের ভিড়ও বেশ অনেকটাই বেশি। তবে গত বছরের শেষ থেকেই করোনার চোখ রাঙানি দেখছে রাজ্যবাসী। সে কথা মাথায় রেখে তাই উদ্যোক্তারা কিছু নিয়মবিধি পালনেরও ব্যবস্থা করেছিলেন। উদ্যোক্তাদের তরফে সাধুদের দেওয়া হয়েছে মাস্ক। কিন্তু বেশিরভাগ সাধু- সন্তদেরই মাস্ক পরতে বা দূরত্ববিধি মানতে চরম অনীহা। এবিষয়ে তাই একটু সমস্যাতেই পড়তে হয়েছে উদ্যোক্তাদের। এখান থেকে তাঁরা প্রথমে যাবেন বাবুঘাটের মেলায়৷ তারপর সেখানে কিছুদিন থাকার পর পাড়ি দেবেন গঙ্গাসাগরের উদ্দেশে ৷
Discussion about this post