মহারাষ্ট্র থেকে ঘোলা অঞ্চলের কর্ণমাধবপুরে নিজের বাড়িতে ফেরার পর থেকেই রীতিমতো আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক। আক্রান্ত যুবকের নাম সৌভিক অধিকারি(২৭)। সৌভিক জানান, ২৯ মে ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ তিনি কলকাতায় ফেরেন। মহারাষ্ট্র থেকে বাসে ওঠার আগে এবং কলকাতায় বাস থেকে নামার পর সব ধরণের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কোনও রকম করোনা উপসর্গ পাওয়া যায়নি শরীরে। তাই ডাক্তার তাঁকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মেনে তিনি নিজের বাড়িতে ঢুকতে গেলে এলাকাবাসীরা তাকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়।
সৌভিকের স্ত্রীর ওপরে রীতিমত চড়াও হয় গ্রামবাসী। ফলত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ওই যুবককে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হয়। এরকম পরিস্থিতিতে তাঁকে স্থানীয় বয়েজ স্কুলের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যেতে বলা হয়। পায়ে হেঁটে পৌঁছনোর পর তিনি দেখেন, আদতে সেখানে কোনও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারই নেই। সেখান থেকে তাকে অন্য একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যেতে বলা হয়। কিন্তু সেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এতটাই দূরে যে তার পক্ষে পায়ে হেঁটে যাওয়া সম্ভব হয়নি। পড়ে যদিও পুলিশের সাহায্যে সেই শ্রমিক বাড়িতে ঢুকতে পারেন। পুলিশের তরফে গ্রামে প্রচারও হয় যে ৩০ মে সৌভিক অধিকারী নিজের সাইকেলে করে স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে লালা রস পরীক্ষা করিয়ে আসবেন।
৩০শে মে সকালে সৌভিক পানিহাটি জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হলে গ্রামবাসীরা ফের চড়াও হয়। পাশাপাশি তাদেরকে পিটিয়ে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয় গ্রামবাসীরা। কোনও রকমে তিনি সাইকেল চালিয়ে হাসপাতাল যান। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, পুরো ঘটনাটি মৌখিকভাবে ঘোলা থানা নথিভুক্ত করেছে। অভিযোগ নথিভুক্তির কোনও স্লিপ তাঁরা পাননি। সৌভিক প্রশ্ন তোলেন, তিনি যদি অসুস্থ হতেন তাহলে এতোগুলি সরকারী পরীক্ষা পেরিয়ে কীভাবে সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে বাংলায় বাড়িতে ফিরলেন? আর কী কী সমস্যার মুখে পড়তে হবে, তা ভেবেই আতঙ্কে দিন কাটছে স্বামী-স্ত্রীর। ‘ডেইলি নিউজ রিল’-এর তরফে ঘোলা থানায় যোগাযোগ করা হলেও পুলিশ এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায় নি।
Discussion about this post