এ যেন অবিকল সিনেমার মতো। নিষিদ্ধপল্লীর এক অনাথ যুবতীকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন বাসুলিয়া গ্রামের ছোট্টু দাস। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। ছোট্টুরা তিন ভাই ও এক বোন। ছোট্টু তাদের মধ্যে মেজো। ছোট্টু একটি খাবারের দোকান চালান। দোকান থেকে বিভিন্ন জায়গায় খাবার হোম ডেলিভারি করেন। সেই সূত্রেই বেশ কিছুদিন ধরেই মহিষাদলের পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিষিদ্ধপল্লিতেও খাবার নিয়ে যান তিনি। সেখানে ৩০-৪০জন আবাসিক তাঁর কাছ থেকে খাবার নেন। যাতায়াতের সুবাদে তিন-চার মাস আগে সেখানকার এক যুবতীকে ছোট্টুর পছন্দ হয়। তাঁকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চান ছোট্টু।
দিন কয়েক আগে নিষিদ্ধপল্লির ওই আবাসিককে নিজের মনের ইচ্ছার কথা জানান ছোট্টু। সাড়া দেন ওই যুবতীও। এরপর সময় নষ্ট না করে ছোট্টু নিষিদ্ধপল্লির যুবতীকে বিয়ের কথা বাড়িতে অভিভাবক সহ অন্যদেরও জানান। তাঁরাও এনিয়ে আপত্তি তোলেননি। এরপরই ওই যুবক নীহারিকা ক্লাবের সম্পাদক মানস বেরার কাছে গিয়ে বিষয়টি উত্থাপন করেন। ক্লাব সম্পাদক সহ অন্যরা ছোট্টুর এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়ে বিয়ের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন।
সোমবার সন্ধ্যায় মহিষাদলের নীহারিকা ক্লাবে সরস্বতী পুজো মণ্ডপে বাসুলিয়া গ্রামের যুবক ছোট্টু ওই অনাথ যুবতীর সিঁথি রাঙিয়ে সারাজীবন পাশে থাকার অঙ্গীকার করলেন। উলু ও শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে তাঁদের মঙ্গল কামনা করা হল। ছেলের নতুন জীবনের এই শুভলগ্নে ছোট্টুর বাবা সনাতন দাস সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত থেকে আশীর্বাদ জানালেন। উপস্থিত ক্লাব সদস্য ও তাঁদের পরিবার, স্থানীয় লোকজন এবং নিষিদ্ধপল্লিতে অনাথ যুবতীর আশ্রয়দাতা একযোগে ওই দম্পতিকে আশীর্বাদ করলেন। এই ঘটনায় বেশ খুশি ক্লাব অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের কথায়, “সবাই যদি ছোট্টুর মত ভাবতে পারত তবে সমাজটা অন্যরকম হত। নিষিদ্ধ পল্লির অন্ধকার থেকে এক সুন্দর জীবন পেত বহু অসহায় তরুণী।”
Discussion about this post