ভোট দেওয়া মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। আর ভোট দেওয়ার অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারেনা যদি সে মানুষ ভারতের ভোটাধিকার প্রাপ্ত সাবালক হন। গুজরাটের এক স্থানে ভোটদাতাকে বাঁধল জটিলতা। বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার কারণ মাত্র একটি ভোটারের জন্য তৈরি হয় পোলিং স্টেশন। কী! খানিকটা ভ্রু কুঁচকে গেল তো। আশ্চর্য হওয়ারই কথা বটে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কোনো ভোটারই ২ কিমির বেশি দূরে গিয়ে ভোট দিতে পারেনা। আর গুজরাটের গির অরণ্যের বানেজ এলাকার কাছাকাছি ২ কিমির মধ্যে কোনো পোলিং বুথ নেই। সেই কারণেই প্রায় ৩৫ কিমি দূরত্ব পেরিয়ে ইলেকশন টিমকে গিয়ে সেখানে এই পোলিং বুথ তৈরি করতে হয় মাত্র একটি মানুষের জন্য । আরে এতক্ষণ যে মানুষটিকে নিয়ে এত কথা বলছি তাঁর নামটাই তো বলা হলো না। মহান্ত ভারতদাস দর্শনদাস, যিনি মহান্ত ভারতদাস বাপু নামেও পরিচিত। বহু বছর থেকে ইনি ওই বানেজ এলাকায় একাকী বাসিন্দা। প্রধানতঃ তিনি ওই এলাকার এক শিব মন্দিরের সেবা করেন এবং বহু বছর তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বিরত থেকে এরকম এক নিঝুম পরিবেশে থাকতেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে এই বানেজ এলাকাটি জুনাগড় লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ২০০৪ সালে প্রথম মহান্ত বাপু প্রথম তাঁর ভোটাধিকার প্রকাশে সোচ্চার হন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্বাচন কমিশনকে ওই এলাকায় একজনের জন্যই পোলিং বুথ খুলতে হয়। তার জন্য এরূপ ব্যবস্থাপনা করার জন্য তিনি ধন্যবাদ দিতে ভোলেন নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। তবে দুঃখের বিষয় যে মানুষটির কথা এতক্ষণ বলছিলাম, তিনি মারা গিয়েছেন ২০১৯ এর নভেম্বরে। তবে শিখিয়ে গেলেন, স্বাধীন ভারতের স্বাধীন নাগরিক হয়ে সকলের অধিকার আছে স্বাধীনভাবে নিজের ভোট দেওয়ার। ভোট দেওয়া প্রতিটি সাধারণ মানুষের আইনসম্মত অধিকার। কেউ সেই অধিকার খর্ব করতে পারেনা, কোনও পরিস্থিতিই সেখানে বাধা হতে পারে না।
Discussion about this post