আজকালকার ব্যস্ত জীবনে সত্যি বলতে সপ্তাহ খানেকের জন্য ঘুরতে যাওয়া প্রায় দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কাছেপিঠে অল্প সময়ের মধ্যে ঘুরে আসা যায় এমন জায়গার খোঁজ চলতে থাকে আমাদের মনে। তাই আপনাদের জন্য আজকে দিলাম এক নতুন জায়গার খোঁজ। মাছরাঙা পাখির নাম সকলেরই জানা। কিন্তু মাছরাঙা নামে যে একটি আস্ত দ্বীপ আছে তাও আবার আমাদের রাজ্যের সীমান্তে তা কি জানেন? আজ্ঞে হ্যাঁ, উত্তর ২৪ পরগনার টাকির কাছে ইছামতি নদী ও ভাসা নদীর ঠিক মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এই মাছরাঙা দ্বীপ। এই স্বল্প পরিচিত দ্বীপের একদিকে রয়েছে বাংলাদেশ এবং অন্যদিকে ভারত।
প্রকৃতিপ্রেমী এবং পাখিপ্রেমীদের জন্য উপযুক্ত জায়গা হলো মাছরাঙা দ্বীপ। প্রতিদিন সূর্যাস্তের সময়ে ইছামতির কোলে ধীরে-ধীরে ঢলে পড়া সূর্যের শেষ আলো এক মায়াবী সৌন্দর্য্যের সৃষ্টি করে। আবার আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমী নাও হন তবু আপনার এই জায়গাটি ভালো লাগবে। কারণ এই অঞ্চলটি বিশেষত পিকনিক স্পট হিসেবেই অধিক পরিচিত। তাই বন্ধুদের নিয়ে আনন্দে সময় কাটানোর জন্য সেরা জায়গা এটি। এছাড়াও নদীপথে বোটিংয়ের সাহায্যে আপনি কাছাকাছি এলাকা তথা টাকি ও সুন্দরবন এলাকায় ভ্রমণ করতে পারেন।
কলকাতা থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপ অন্যান্য সব দ্বীপের থেকে অনেকটাই আলাদা। এই দ্বীপটির নাম মাছরাঙা হলেও এখানে এলে আপনাকে শুধু মাছরাঙা দেখেই ফিরে যেতে হবে না। এর সাথে সাথে আরও নানান প্রজাতির পাখি আপনি দেখতে পাবেন যেমন কেনটিশ প্লভার্স, টিকেলস থ্রাস, লিটলটার্নস প্রভৃতি। আবার আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী হন তাহলে হেঁটে ঘুরে নিতে পারেন ম্যানগ্রোভের জঙ্গল। আবার এখানে বেশ কয়েকটি মন্দিরও রয়েছে যেমন, মাছরাঙা মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির এবং কালীবাড়ি। আপনি চাইলে মন্দিরগুলিও দর্শন করে নিতে পারেন। এই দ্বীপটি বাংলাদেশের খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায় আপনি এখান থেকে বাংলাদেশি জেলেদের মাছ ধরাও দেখতে পারেন।
যদি একান্তে কিছুদিন কাটাতে চান তাহলে যেতেই পারেন এই মাছরাঙা দ্বীপে। সবুজে সবুজ এই দ্বীপের মায়াবী পরিবেশ মুহূর্তে ভুলিয়ে দেবে সব ক্লান্তি। এবার কথা হচ্ছে আপনি মাছরাঙা দ্বীপে পৌঁছবেন কি করে? মহানগর কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে হাসনাবাদ লোকাল ধরে প্রায় দু’ঘণ্টার মধ্যে আপনি পৌঁছে যাবেন টাকি স্টেশন। এবার টাকি স্টেশন থেকে অটো কিংবা টোটোতে ১০ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন ইছামতির ধারে। সেখান থেকে নৌকা বা লঞ্চে পৌঁছে যাবেন মাছরাঙা দ্বীপে।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – https://www.travelescape.in/
Discussion about this post