করোনা প্রতিরোধে গোটা ভারতে জারি হয়েছে লকডাউন। যদিও ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির এই বন্দী দশা একেবারেই না-পসন্দ! পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে আড্ডাই হোক কিংবা ছুটির দিনে একটু আশেপাশে ঘুরে বেরানো! কার্যত বন্ধ এখন সবই। ঘরে বন্দী থেকে কাঁহা তক আর সোশ্যাল মিডিয়া ঘাঁটাঘাঁটি করা যায়! করোনার আতঙ্কে গোটা বিশ্ব যখন কাঁপছে তখন লক ডাউনের নিয়ম উপেক্ষা করেই রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। আড্ডা বসাচ্ছেন চায়ের দোকানেও। ঠিক এই পরিস্থিতিতে মানুষকে ঘরমুখী করে তুলতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন একদল তরুণ-তরুণী।
রোজকার জীবনের কর্মব্যস্ততা ও ইন্টারনেটের যুগে বই বা মাসিক পত্রিকা পড়ার চল প্রায় হাতে-গোনা। বিশ্বায়নের সঙ্গে আমরা যতো আধুনিক হয়ে উঠছি, হাতে নিয়ে বই পড়ার অভ্যাস ক্রমশই কমছে আমাদের। তাই এই আধুনিকতাকে হাতিয়ার করেই তুর্য, মণিদীপা, সন্দীপন, রাতুলের মতো তরুণ-তরুণীরা মানুষের কাছে বইকে পৌঁছে দেবার চেষ্টা করে চলেছেন। লকডাউন শুরু হওয়ার পরেই সন্দীপন ও তূর্য শুরু করেছে তাদের পিডিএফ লাইব্রেরী, যার মূল স্লোগান হল #স্টে_হোম_রিড_বুকস। ‘ডেইলি নিউজরিল’কে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তুর্য এবং সন্দীপন জানিয়েছেন, “এটাকে পাগলামি বলতেই পারেন। কিন্তু বইয়ের লোভ দেখিয়ে যদি দশটা লোককে বাড়িতে আটকে রাখতে পারি তাহলে একটু পাগলামি না হয় করলাম। এই যুদ্ধটা তো আমাদের ঘরে বসেই লড়তে হবে।” অন্যদিকে মণিদীপা, অর্কপ্রভ, রাতুলদের উদ্যোগের নাম ‘হোয়াটসঅ্যাপ লাইব্রেরী’। মূলতঃ হোয়াটস অ্যাপ বা টেলিগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন বইয়ের পিডিএফ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই উদ্দেশ্যে দুটি গ্রুপেরই। প্রসঙ্গতঃ হোয়াটসঅ্যাপ লাইব্রেরী বেশ পুরনো একটি গ্রুপ যারা অনেকদিন ধরেই এইভাবে কাজ করে চলেছে। হোয়াটসঅ্যাপ লাইব্রেরীর পক্ষ থেকে মণিদীপা জানান, মানুষের মধ্যে তাঁরা মূলতঃ হার্ড কপিই ছড়িয়ে দেন। যদিও এই পরিস্থিতিতে মানুষকে পিডিএফ দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কোনও নতুন বইয়ের পিডিএফও তাঁরা দেন না। বই দেওয়ার ক্ষেত্রেও স্বত্ত্বাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলে আইন মেনেই কাজ করেন তাঁরা।
এখন প্রতিটি মানুষের পকেটে অ্যান্ড্রয়েড ফোন। সেই আধুনিক যন্ত্রের হাত ধরেই নতুন করে বই পড়ার অভ্যাস জন্মাক মানুষের। লকডাউনের পরিণতিতে মানুষ ঘরবন্দী থেকে রীতিমত দিশেহারা হয়ে উঠেছে। তখন মানুষকে নতুন করে সাহিত্যমুখী করে ঘরে আটকে রাখার এই উদ্যোগকে সেলাম জানিয়েছেন অনেকেই। সবাই ঘরে থেকে এই লকডাউন সফল করে নতুন করে বইমুখী হয়ে উঠুন। এটুকুই আশা রাখছেন সন্দীপন, মণিদীপারা।
পিডিএফ লাইব্রেরীর সাথে যোগাযোগের মাধ্যম: সন্দীপন 90025 67190, তূর্য 87774 50773
হোয়াটসঅ্যাপ লাইব্রেরী সাথে যোগাযোগের মাধ্যম: রাতুল 7688000567, মণিদীপা 9836232708
Discussion about this post