গরমে হাঁসফাস অবস্থা। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পার করে আরও চড়ছে। তাই এই গরম থেকে বাঁচতে বেড়িয়ে পড়ুন বেড়াতে। কিন্তু এই সময় বেড়াতে যাবেন কোথায় এটা ভাবছেন? ঘুরে আসুন কাছাকাছির মধ্যেই। গরমের ছুটি কাটানোর জন্য সবচেয়ে মনোরম জায়গা হতে পারে উত্তরবঙ্গ। কয়েকদিনের জন্য বেড়িয়ে আসুন উত্তরবঙ্গের লিংসে থেকে। এখানে ইকো ট্যুরিজমেরও ব্যবস্থা আছে। একটু নির্জনে একদম প্রকৃতির কোলে সময় কাটানোর জন্য একটি সেরা অফবিট ডেস্টিনেশন এটি।
৪৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত লিংসে কালিম্পং জেলার একটি ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামের প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য আপনাকে এক অন্য জগতে নিয়ে যাবে। সবুজ পাহাড়ের মাঝে মেঘেদের ভেসে বেড়ানো আর রোদ-কুয়াশার লুকোচুরি গ্রাম জুড়ে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগেই কানে ভেসে আসবে নানা প্রজাতির পাখির ডাক। পাহাড়ের ঢালে কাঠের বাড়িগুলো দেখলে মনে হবে রং তুলির টানে গ্রামটিকে সাজিয়ে তুলেছেন কোনো দক্ষ চিত্রকার। গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে অর্কিডের বাগান। এখানকার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, গ্রামবাসীরা পাহাড়ের ধাপে ধাপে এলাচের চাষ করেন। এছাড়াও এখানে অর্গানিক চাষও লক্ষ্য করা যায়।
এই গ্রামে সব থেকে বেশি গোর্খারাই বসবাস করে। এছাড়াও এখানে আপনারা লেপচা ও ভুটিয়া জনজাতির মানুষদের দেখতে পাবেন। তাদের মিষ্টি স্বভাব মানুষকে মুগ্ধ করবেই। গ্রাম থেকে কিছুটা দূরেই দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘা। এই গ্রামের খুব কাছেই রয়েছে নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক। আপনি চাইলে পাথুরে পথ ধরে ট্রেক করে পৌঁছে যেতে পারেন এই ন্যাশনাল পার্কে। এছাড়া লিংসে থেকে ঘুরে নিতে পারেন পিতমচেন, সেরিকালচার সেন্টার, মূলখাড়কা লেক, লেপচা মনেস্ট্রি, আরিতার লেক।
রাত্রিযাপনের জন্য লিংসেতে কিছু হোমস্টে রয়েছে। এর আশেপাশে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে তৈরি হয়েছে কিছু হোটেলও। এখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে জনপ্রতি প্রতিদিন দু হাজার টাকা খরচ হতে পারে। কিন্তু আপনি লিংসে পৌঁছবেন কি করে? প্রথমে হাওড়া বা শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি জংশনে আসতে হবে। এনজেপি থেকে ৭৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কালিম্পং। এখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে কালিম্পংয়ের রাস্তা ধরে আপনি পৌঁছে যেতে পারেন লিংসে।
চিত্র ঋণ – সুজিত মন্ডল, শৌনক দাশগুপ্ত
Discussion about this post