পুরুলিয়ার বুকে ঝাড়গ্রাম ব্লকের কোলে অবস্থিত কুইলাপাল। এই অঞ্চলের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে থাকা কুইলাপালের হাট কেবল কেনাকাটার জায়গা নয়, বরং এটি একটি জীবন্ত ইতিহাসের নিদর্শন। ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছে এই হাটের ইতিহাস। তখন এটি ছিল কৃষিজাত পণ্য, পশুপালন এবং হস্তশিল্পের প্রাণকেন্দ্র। আজও হাটে পাওয়া যায় স্থানীয় কারুশিল্পের অপূর্ব নিদর্শন যেমন – মৃৎশিল্প, বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র এবং বিভিন্ন স্বাদের খাবার।
কুইলাপাল হাটে কৃষিজাত পণ্য, তাজা শাকসবজি, ফল, মশলা, মাংস, মাছ, পোশাক, গৃহস্থালীর জিনিসপত্র, পোষা প্রাণী এবং আরও অনেক কিছু পাওয়া যায়। এটি শুধু কেনাকাটার জন্যই নয়, বরং স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উপভোগ করার জন্যও একটি আদর্শ স্থান।
এই হাটে নানান স্থানীয় খাবার যেমন – মুড়ি, ঘুগনি, পিঠে ইত্যাদি পাওয়া যায়। তাছাড়াও এখানে বিভিন্ন লোকশিল্প, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান-বাজনা ও লোকনৃত্যের আসর বসে। এই হাটের পরিবেশ খুবই প্রাণবন্ত ও রঙিন, যেখানে মানুষের হাসি, আনন্দ, কেনাকাটার ধুম এবং মেলার মতো অনুভূতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। হাটটি মূলতঃ সপ্তাহে একদিনই বসে।
এই হাট স্থানীয়দের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষ এখানে আসেন। কুইলাপাল পুরুলিয়া শহর থেকে প্রায় ৭৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পুরুলিয়ার কুইলাপালের হাট কেবল একটি বাজার নয়। বরং এটি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং রোমাঞ্চের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। যারা ঐতিহ্যবাহী বাংলার স্বাদ অনুভব করতে চান, তাদের জন্য কুইলাপালের হাট অবশ্যই এক দর্শনীয় স্থান।
চিত্র ঋণ – ডিয়ার বেলপাহাড়ি
Discussion about this post