জীবনের আরেক নাম সংগ্রাম। জন্মের পর প্রথম দিন থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলে, কখনও জীবনের সমস্যাগুলির সাথে বা কখনও সমাজের সাথেই। জীবনে বড়ো হওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে দায়িত্ব ও সংগ্রাম ক্রমশ বাড়তে থাকে। তবে বহুক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিকূলতায় অনেক ছোট বয়সেই গুরু দায়িত্বগুলি এসে পড়ে কাঁধে। এমনি এক সাহসী গল্পের নায়িকা মাত্র ১৭ বছরের ‘কার্তিকা’। এই অল্প বয়সেই পরিবারের দায়িত্ব সামলাতে পড়াশুনার পাশাপাশি বাইক মেরামতির কাজ বেছে নিয়েছে সে।
জীবন যুদ্ধের এই অভিনব কাহিনী মহারাষ্ট্রের। মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে বসবাস ছোট্ট কার্তিকার। স্থানীয় অমরাবতী হাই স্কুলের ছাত্রী কার্তিকা। বাড়িতে রয়েছেন তার অসুস্থ মা ও বৃদ্ধা ঠাকুমা। অভাবের সংসারে কার্তিকাই এক মাত্র উপার্জনকারী। বাইক মেরামতি থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে পড়াশুনার ও সাংসারিক খরচ চালানোর পাশাপাশি মায়ের চিকিৎসা ও চালিয়ে যাচ্ছে ছোট্ট কার্তিকা।
অমরাবতী অঞ্চলের ‘দুর্গা মোটরস’ নামে প্রসিদ্ধ একটি দোকানে এই ছোট্ট মেয়ে কার্তিকা কাজ করে।সকালবেলায় ঘরের কাজ শেষ করে তারপর স্কুল যাওয়া কার্তিকার দৈনন্দিন রুটিনের অংশ। এরপর স্কুল থেকে ফিরেই সে লেগে পড়ে বাইক মেরামতির কাজে। তাই হোমওয়ার্ক ও পড়াশুনার জন্য সে বেছে নিয়েছে গভীর রাতকেই। দিনের অনেকটা সময় বাইক মেরামতির কাজে ব্যাস্ত থাকলেও অমরাবতী হাই স্কুলে ক্লাসের প্রথম স্থান অধিকারী মেধাবী কার্তিকা।
পড়াশুনার পাশাপাশি বাইক মেরামতিতেও সিদ্ধহস্ত কার্তিকা। অমরাবতী অঞ্চলের রয়্যাল এনফিল্ড বুলেটের স্পেশালিস্ট নামে এক ডাকে মানুষ তাকে চেনে। এছাড়া ও সমস্ত বাইকের মেরামত সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জানে সে। সামাজিক বিধিনিষেধের কাছে পড়াশুনার অধিকার হারানো মেয়েদের কাছে এক অনুপ্রেরণা কার্তিকা। নম্র স্বভাবের ছোট কার্তিকা অমরাবতী অঞ্চলের সমস্ত মানুষের হৃদয়ের মণি।
Discussion about this post