উড়িষ্যার বুকে লুকিয়ে থাকা এক অপূর্ব নির্মল সৌন্দর্য্যের নাম কানাকুন্ডা। অনেকেই একে ‘উড়িষ্যার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ বলে থাকেন। এই গিরিখাতের গভীরতা এবং বিস্তৃতি দেখে মনে হয় যেন কোনো উপন্যাসের দৃশ্য। এই গিরিখাতটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এবং ভূতাত্ত্বিক গুরুত্বের একটি অবিশ্বাস্য মিশ্রণ।

এটি ভুবনেশ্বর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে উদয়গিরি এবং খন্ডগিরি পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম। এই উপত্যকার মাঝখান দিয়ে একটি ছোট নদী বয়ে গেছে। এই নদীর জল এতটাই পরিষ্কার যে তলায় পড়ে থাকা পাথরগুলি স্পষ্ট দেখা যায়। এখানকার গিরিখাতের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ছোট ছোট ঝর্ণাধারা এবং শীতল বাতাস পর্যটকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। পাথরের রঙ, আকৃতি এবং গঠন আলোর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভিন্ন রূপ ধারণ করে, যা এই স্থানকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
কেন কানাকুন্ডাকে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের সাথে তুলনা করা হয়? কানাকুন্ডার ভৌগোলিক গঠন গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মতোই। উঁচু উঁচু পাহাড়, গভীর খাঁড়া উপত্যকা আর নদীর প্রবাহ – এই দুটি স্থানের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। কানাকুন্ডা ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় হল শীতকাল। এই সময় আবহাওয়া খুবই উপযোগী থাকে। তবে বর্ষাকালেও কানাকুন্ডার সৌন্দর্য্য অন্যরকম। ঝর্ণাগুলিতে জলের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং সমগ্র অঞ্চলই সবুজ হয়ে ওঠে। এই অঞ্চলের আশেপাশে কিছু প্রাচীন স্থাপত্য ও মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যা এই স্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্বকেও বাড়িয়ে তুলেছে।
কানাকুন্ডা হল প্রকৃতির এক অপূর্ব নিদর্শন। এই স্থানটি ভারতের অন্যতম সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র। যদি আপনি প্রকৃতির মাঝে কিছু সময় কাটাতে চান তাহলে কানাকুন্ডা আপনার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগের পাশাপাশি এখানে ট্রেকিং, পাখি পর্যবেক্ষণ এবং ফটোগ্রাফির জন্যও উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। কানাকুন্ডা পৌঁছতে হলে উড়িষ্যার সুন্দরগড় হয়ে আসতে হয়। এখানে পৌঁছতে হয় মূলত বালেশ্বঙ্করপুর গ্রাম হয়ে। এখানেই রয়েছে সেই আশ্চর্য ভূমিরূপ। যাকে একদিকে যেমন ‘উড়িষ্যার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ বলা হয় তেমনই বলা হয় ‘স্টোনবেড অফ রিভার’।
চিত্র ঋণ – বং Doze







































Discussion about this post