ভাসমান শহর ভেনিসের কথা কম বেশি সকলেই শুনেছেন। কিন্তু ভাসমান গ্রাম! তাও আবার বিশ্বের সবথেকে বড়ো? হিসেব একদম মিলছে না তাই না? মনে হচ্ছে এতো অসম্ভব। তবে পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। ব্রুনেইয়ে অবস্থিত ‘ক্যাম্পং আয়ের’ কথাটির অর্থই ভাসমান গ্রাম। শোনা যায়, আজ থেকে প্রায় এক হাজার বছর আগে, বাজাউ নামের উপজাতির লোকেরা ব্রুনেই নদীর ওপর তৈরি করে নিজেদের এই ভাসমান বাসস্থান। পরে সময়ের সাথে সাথে গ্রামটির আরও বিস্তার ঘটে। শুনলে অবাক হবেন গ্রামের প্রতিটি ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে স্বচ্ছ জল এমনকি ওয়াই ফাইয়ের সুবিধা!
এছাড়াও গ্রামে রয়েছে থানা, ফায়ার ব্রিগেডের বন্দোবস্ত। আরও রয়েছে মসজিদ, স্কুল, চিকিৎসাকেন্দ্র, পেট্রোল পাম্প এমনকি রেস্তোরাঁ। এখানে জলপথে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হয় স্পীডবোট। এখানে প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ বসবাস করে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই মৎস্যজীবী। ব্যবসায়ীদের তৈরি করা পুরোনো নথি অনুযায়ী, হাজার বছরেরও আগে বাজাউ সি নোম্যাডস ব্রুনাই নদীর উপরে ঘর নির্মাণ করেছিলেন। সেই থেকেই ধীরে ধীরে এখানে এই গ্রাম গড়ে ওঠে। আর সেই গ্রামই হয়ে ওঠে বিশ্বের সবথেকে বড়ো ভাসমান গ্রাম। ক্যাম্পং আয়েরের একমাত্র বন্দর সেরি বেগোওয়ানে। এই বন্দরই গ্রামগুলির একমাত্র সংযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
১৫২১ খ্রীষ্টাব্দে ব্রুনাইয়ের কাছে যাত্রা করেছিলেন পর্তুগিজ ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান ভেনেজুয়েলার পণ্ডিত অ্যান্টোনিও পিগাফেটা। তখনই তিনি অ্যান্টোনিয়া ও আশেপাশের গ্রামের মধ্যে সাদৃশ্য দেখতে পান। বর্তমানে এই গ্রামেই রয়েছে বিভিন্ন আধুনিকতার ছোঁয়া। বিশ্বের এই সবথেকে বড়ো ভাসমান গ্রাম আবার পূর্বের ভেনিস নামেও পরিচিত। যাবেন নাকি একবার?
Discussion about this post