“করোনা ভাইরাস ইয়া কোভিড ১৯ সে আজ পুরা দেশ লড় রহা হ্যায়। পর ইয়াদ রহে হামে বিমারি সে লড়না হ্যায়, বিমার সে নেহি…”- চেনা চেনা লাগছে? নিশ্চয়ই! কারণ বিগত প্রায় তিন মাস ধরে এই কথাগুলোই আমরা শুনে আসছি কাউকে ফোন করার সময়। তা নিয়ে তো মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। রীতিমত বিরক্তির কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু মানুষের কাছে এই কোভিড-১৯ কলারটিউন। কিন্তু কেন এই কলারটিউন? কারণটা অবশ্যই সচেতনতা বৃদ্ধি। আর এই সচেতনতার নেপথ্যে কে রয়েছে জানেন? যাঁর কন্ঠস্বর প্রতি মুহূর্তে ভারতবাসীকে সতর্কবার্তা দিচ্ছে, তিনি বিশিষ্ট ভয়েস ওভার শিল্পী দিল্লি নিবাসী জ্যাসলিন ভাল্লা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের করণীয় কী, তা আমরা এই ৩০ সেকেন্ডের কলার টিউনে শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া হয়েছিল সরগরম। তৈরি হয়েছিল বেশকিছু মিম, কমিক ভিডিও। তবে এসব বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করেছেন জ্যাসলিন।
বর্তমানে একজন পেশাদার ভয়েস ওভার শিল্পী জসলিন তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে। তবে গত দশ বছরেরও বেশি সময় আগে তিনি বেছে নিয়েছিলেন তাঁর বর্তমান পেশাকেই। দিল্লি বিমানবন্দর, ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেট বিমান পরিষেবা, পেটিএম, মেক মাই ট্রিপ, এমনকি গুগল অ্যাডস- এর জন্যও কন্ঠ দিয়েছেন জসলিন। তাঁর কথায়, অন্যান্য দিনের মতোই এক স্টুডিওর প্রোডিউসার তাঁকে ফোন করেন এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে দেওয়া কোভিড-১৯ সতর্কবার্তার একটি সংক্ষিপ্তসার দেন। তাঁকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে এটি রেকর্ড করতে বলা হয়। বিষয়টি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গভীর। তাই মানুষের কাছে সহজ ভাষায় এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জ্যাসলিনকে। তাঁর দায়িত্ব তিনি নিপুণতার সাথে পালন করলেও তখনও তিনি জানতেন না যে তাঁর এই কাজটি কোটি কোটি ভারতবাসীর রোজকার সঙ্গী হতে চলেছে। প্রথমদিকে নিজের কন্ঠস্বর নিজের ফোনে শুনে তিনি অবাক ও খুশি দুই-ই হয়েছিলেন। তাঁর এটাও মনে হয়েছিল যে তিনি নিজেই নিজেকে সতর্ক করছেন।
পেশায় একজন দক্ষ ভয়েস ওভার শিল্পী হলেও জ্যাসলিন কবিতা এবং গানও লেখেন। কণ্ঠস্বর পরিচিত ও বিখ্যাত হলেও অন্যান্য ভয়েস ওভার শিল্পী যেমন প্রচারের অন্তরালেই থেকে যান, জ্যাসলিন ভাল্লার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে প্রচারের আড়ালে থাকা এই মহিলাও একজন করোনা-যোদ্ধা। দীর্ঘ হোক তাঁর কর্মজীবন। ‘ডেইলি নিউজ রিল’এর তরফে তাঁর এই লড়াইকে কুর্নিশ।
Discussion about this post