শৈব উপাসকদের কাছে আজ এক বিশেষ দিন। শিব ও শক্তির মহামিলনকে কেন্দ্র করে আজ শিবরাত্রির উদযাপন। দেশ জুড়ে নানা জায়গায় ‘ওঁম নমঃ শিবায়’ ধ্বনিতে মেতে থাকবে চার প্রহর। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর থেকে দক্ষিণ ভক্তদের ভিড়ে গমগম করে সকল মন্দির প্রাঙ্গণ। আর উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে প্রাচীন শিবমন্দির গুলোর মধ্যে একটি হল জল্পেশ মন্দির।

কোচরাজা বিশ্ব সিংহ ১৫২৪ সালে ময়নাগুড়ির জরদা নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত করেন জল্পেশ মন্দির। সময়ের ধারায় এই মন্দিরেও পড়েছে ইতিহাসের প্রলেপ। প্রতিষ্ঠানের পরবর্তী ১৩৯ বছর পর, ১৬৬৩ সালে এই মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন রাজা প্রাণ নারায়ণ। শিবলিঙ্গের অবস্থান এখানে গর্তের ভিতর। তাঁর অপর নাম অনাদিও। তবে ভক্তদের মহাসমারোহে সপ্তদশ শতক থেকেই মন্দির চত্বরে শুরু হয় বিশাল মেলার আয়োজন। উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম মেলাগুলোর মধ্যে এই মেলা অন্যতম। প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ থেকেও ভিড় জমান ভক্তের দল। গতকাল থেকেই মেলার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে।

কোভিডের জন্য মেলা বন্ধ ছিল গত দু’বছর। মহামারির ঢেউ কমতেই শুরু হয়ে গিয়েছে মেলাকে ঘিরে পুণ্যার্থীদের উত্তেজনা। বিশাল ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে মন্দির চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশবাহিনী। সঙ্গে মেলাপ্রাঙ্গণে বসানো হয়েছে ২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। মেলায় প্রবেশের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরিধান। দশদিন ব্যাপী এই মেলায় লক্ষ্মী লাভের আশায় পসরা সাজান দোকানিরা। বেশ ভালোই ব্যবসা হয় এই ক’দিনে। তবে শিবরাত্রির পাশাপাশি শ্রাবণ মাসেও এখানে ভিড় করেন ভক্তের দল। স্থানীয় লোকেরা এই মেলাকে শ্রাবণী মেলা হিসেবেই চেনে। তবে আপাতত শিবরাত্রিকে ঘিরেই তোড়জোড় ভক্তদের। হর হর মহাদেব ধ্বনিতেই ভরে থাকছে মন্দির চত্বর।
Discussion about this post