উৎসব বঙ্গ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সারা বাংলা যখন শারদীয়া ও দীপাবলির শেষের মন খারাপ ভুলতে থাকেন পরের বারের কথা ভেবে। তখনই পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর, চন্দননগর সহ পারিপার্শ্বিক অঞ্চলের মানুষ মেতে ওঠেন মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনায়। জগদ্ধাত্রী, যিনি জগতকে ধারণ করেন। উপনিষদে তার নাম উমা হৈমবতী। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, মায়ের পুজো মহাধূমধামে পালিত হয় বাংলাদেশেও। বাংলাদেশের বৃহত্তম জগদ্ধাত্রী পুজো অনুষ্ঠিত হয় কলসকাঠিতে।
কলসকাঠী বাংলাদেশের বরিশাল জেলার অন্তর্গত বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়ন। কলসকাঠীতে অবস্থিত একটি প্রাচীন জমিদার বাড়ি, যেটিকে শুধু বাড়ি বললে কম বলা হয়, বরং বলা হয় একটি প্রাচীন শহর। জমিদার বাড়ির পাশেই অবস্থিত প্রাচীন শিব মন্দির। যেখানে রয়েছে মূল্যবান কষ্ঠি পাথরের মূর্তি। মন্দিরের সামনে রয়েছে বেদী, যেখানে পশু বলি দেওয়া হয়। প্রতিবছর এই মন্দিরেই মহাসমারোহে মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করা হয়। তিন দিন ধরে চলে মায়ের পূজা।
জগদ্ধাত্রী পূজাকে কেন্দ্র করে কলসকাঠী রূপ নেয় এক মিলনমেলায়। দেশের দূর দূরান্ত থেকে লক্ষাধিক মানুষ ছুটে আসে প্রাচীন এই জগদ্ধাত্রী পূজাতে। কলসকাঠী ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব জানান, “ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার। জগদ্ধাত্রী পূজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে স্থানীয় প্রশাসন, বর্ডার গার্ড, পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশসহ সকল আইন শৃখলা বাহিনী সর্বদা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে।” পুজো উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা দোকান দেন কলসকাঠিতে। এছাড়াও পুজোয় বিনোদনের জন্য কলসকাঠিতে থাকে বায়োস্কোপ, পুতুল নাচ, রাধা চক্কর, গানের আসর, ব্যান্ড শো সহ নানান অনুষ্ঠান। জগদ্ধাত্রী পুজো উদযাপন কমিটির উপদেষ্টাদের মতে, “প্রতি বছর কলসকাঠিতে মোট ৭টি মন্ডপে জগদ্ধাত্রী পুজো উদযাপিত হবে। কালীবাড়ি পুজো মন্ডপ ও সৎ সঙ্গ পুজো মন্ডপে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এ পুজো উদযাপিত হয়ে থাকে।”
Discussion about this post