যা আছে তা নিয়েই এগিয়ে যাওয়া ভালো- জ্যাকি হান্ট মনে হয় এই ধারণাতেই বিশ্বাসী। আর এই বিশ্বাসই জিতিয়ে দিয়েছে তাকে। ভাবছেন নিশ্চয়ই হার জিত কিসের? মশাই সামান্য কোনো খেলায় হার জিতের কথা বলছি না! এ হলো জীবনের খেলা। আর এই খেলাতেই জয়ী জ্যাকি হান্ট। মারণ রোগ ক্যান্সার কেড়ে নেয় প্রচুর মানুষের প্রাণ। আবার প্রাণ ফিরিয়ে দিলেও কেড়ে নেয় এমন কিছু জিনিস, যা ছাড়া মানুষ একেবারেই অচল। জ্যাকির সাথেও তাই হয়েছিলো। সালটা ২০০১। তখন ক্যান্সার নিয়ে এতো ওষুধ বেরোয়ই নি। তখন এই মারণ রোগের শিকার হয়েছিলেন হান্ট। আর সেই রোগই কেড়ে নিয়েছিলো তার একটা পা।
তবে ভেঙে পড়েননি একটুও। কৃত্রিম পা লাগিয়ে নিয়েছিলেন। শুধু এতেই থেমে থাকেননি কিন্তু। স্বপ্ন দেখেছিলেন ম্যারাথনে দৌঁড়োবেন। ভাবা যায়! কতো মানুষ তো দুটো পা থেকেও কিছুই করতে পারেন না। বলা ভালো করতে চান না। তবে জ্যাকি ব্যতিক্রম। এবার নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে, কি এমন করেছে জ্যাকি! শুনলে ভিরমি খাবেন এই বলে দিলাম। টানা ১০২ দিনের ১০২ টি ম্যারাথনে অংশ নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন। ইউপিআই ( মার্কিন সংবাদমাধ্যম) এর গত শুক্রবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, “যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে জ্যাকির বাড়ি। গত বৃহস্পতিবার তাঁর জীবনে ছিল বিশেষ একটি দিন। এদিন তিনি ২৬ দশমিক ২ মাইল দৌড়েছেন।”
এরকম এক ঘটনা ঘটেছিলো ২০২০ সালে। অ্যালিসা ক্লার্ক টানা ৯৫টি ম্যারানে দৌড়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন। এবার তা করলেন জ্যাকি হান্ট। টানা ১০২ দিনে ১০২টি ম্যারাথনে দৌড়ে জ্যাকি হান্ট ক্লার্কের রেকর্ড ভেঙেছেন। এখন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেলে একটানা সবচেয়ে বেশি ম্যারাথনে দৌড়ানোর বিশ্ব রেকর্ড জ্যাকির নামে হবে।
তিনি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ”অসুস্থ হওয়ার পর আমাকে বলা হয়েছিল, আর কখনোই দৌড়াতে পারবে না তুমি। কিন্তু আমি দৌড় বন্ধ করতে চাইনি। আমি আবার ট্র্যাকে ফিরতে চেয়েছি। বিশ্ব রেকর্ড গড়তে চেয়েছি। এই ইচ্ছা আমাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে। দৌড়াতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়তে আমাকে সফল করেছে।” কী বুঝলেন? ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। হতেই হবে। এতো সাধনা, এতো পরিশ্রম, এতো আশা, এতো স্বপ্ন, সবথেকে বড়ো এতো প্রবল ইচ্ছেশক্তি! তা কি কখনো হেরে যেতে পারে? নৈব নৈব চ।
Discussion about this post