মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মধ্যে ইজরায়েল স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত। বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সামরিক এবং প্রযুক্তির দিক থেকেও শক্তিশালী দেশ ইজরায়েল। এবছরের শুরু থেকে ইজরায়েলে দেখা গিয়েছিল দেশের ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম বিক্ষোভ সমাবেশ। বিক্ষোভের কারণ, উগ্র ডানপন্থী সরকারের তৈরি বিচার ব্যবস্থা সংক্রান্ত আইন। লাখ লাখ মানুষের প্রতিবাদ চলেছে টানা কয়েকমাস। নতুন এই বিচার ব্যবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের সার্বভৌম ক্ষমতাকে শাসকদল নিজেদের আওতায় আনতে চেয়েছে। বিরোধীদের মতে, এতে দেশের গণতন্ত্রের মৃত্যু হবে। ফলে, এখান থেকেই সংঘাতের শুরু।
জনগণের এই বিদ্রোহ চলছে আজও। কিন্তু কর্পোরেট মিডিয়া ব্যস্ত একটি চমকদার খবরে। ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বুকে বসতে চলেছে পেসমেকার। অনিবার্যভাবেই নেতার শরীরের হাল-হকিকত, অপারেশনের তারিখ ইত্যাদির বিস্তৃত ধারাবিবরণী দিয়ে চলেছে বড়ো বড়ো সংবাদমাধ্যমগুলি। এদিকে সাংঘাতিক গরম ও যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে মানুষ মিছিলে হাঁটছেন বিগত কয়েক মাস ধরে। ইজরায়েলের প্রতিটি শহরের রাস্তা যেন হয়ে উঠেছে নীল-সাদা পতাকার সমুদ্র। সংসদের বাইরে তৈরি হয়েছে বিক্ষোভকারীদের ছোট ছোট সাদা তাঁবুর সারি। এই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে ডানপন্থী সরকারের বিরোধী দলগুলিও।
বিতর্কিত এই আইন পাসের বহু প্রতিক্ষিত ভোট আগামী সোমবার। এর ঠিক আগে, জনগণের প্রচন্ড বিক্ষোভের সামনে প্রধানমন্ত্রীর এই আচমকা অসুস্থতা দেশের রাজনীতিতে এনে দিয়েছে নাটকীয় মোড়। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অধিকর্তারা সহ ১০০ জনেরও বেশি শীর্ষস্থানীয় প্রাক্তন প্রধানেরা প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করে চিঠি লিখেছেন। তাঁদের মতে এই বিচার আইন দেশের জনগণকে বিচ্ছিন্ন করবে এবং দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপোশ করা হবে। সুতরাং এই আইন প্রত্যাহার করা হোক। এখন সোমবার এই আইন পাসের চূড়ান্ত ভোটের আগে সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয় তার প্রতিক্ষায় লাখ লাখ ইজরায়েলবাসী আজ রাস্তায়।
Discussion about this post