করোনা আতঙ্ক গোটা বিশ্বজুড়েই ত্রাসের আকার নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য নিয়ামক সংস্থা হু ১২ মার্চ এটিকে প্যানডেমিক তথা বিশ্বব্যাপী মহামারী আখ্যা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একমাত্র সামাজিক দূরত্ব বজায়ই মহামারীর প্রকোপকে দূর করতে পারে। গোটা দেশ এখন কার্যত লকডাউনে। বিশ্বব্যাপী এই প্যানডেমিক রোগ প্রথম কোন ঘটনা নয়। এর আগেও প্লেগ, কলেরা, এশিয়ান ফ্লু, টাইফয়েডের মতো রোগ বিশ্বব্যাপী ত্রাস সৃষ্টি করেছে। প্রসঙ্গত, এদের অনেকেই অনেকবার করোনার থেকেও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। প্লেগ বিশ্বের ইতিহাসে প্যানডেমিক হিসেবে বহুবার আত্মপ্রকাশ করেছে। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল, গ্রেট প্লেগ অফ লন্ডন যা ১৬৬৫ থেকে ১৬৬৬ পর্যন্ত আতঙ্কের কারণ ছিল। তখন লন্ডনের কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে তখন ছাত্র ছিলেন বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন। স্যার উপাধি তখনও মেলেনি। লন্ডন সরকার রোগের প্রকোপ কমাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ঘোষণা করলেন। বন্ধ হল স্কুল-কলেজ দপ্তর। বন্ধ হলো কেমব্রিজও। গৃহবন্দি হলেন বিজ্ঞানী।
কোন প্রশিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই গৃহবন্দী নিউটন কেমব্রিজে তার শুরু করা গাণিতিক সমস্যার ঝুলি নিয়ে বসলেন। ইন্টারনেট ছিল না তখন। কাজেই গৃহবন্দী থেকেই বিজ্ঞানের সেই স্বনামধন্য ছাত্র জোগাড় করলেন কিছু প্রিজম। তারপর নিজের শোয়ার ঘরেই সূক্ষ্ম আলোর উৎস তৈরি করে আলোকবিজ্ঞান এর ওপর সেখানেই চালালেন গবেষণা। এরকম বেশ কিছু গবেষণা তিনি সেই মুহুর্তেই করেছিলেন যা পরবর্তীতে বিশ্ববন্দিত হয়। রোগের প্রকোপ কমার প্রায় ছয় মাস পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন এবং প্রভূত প্রশংসা লাভ করেন। তার প্রায় দুই বছর পর তিনি অধ্যাপক হন। করোনা আতঙ্কে যারা গৃহবন্দী আছেন, তারাও এভাবেই নিজের আপন শৈলীর বিকাশ ঘটাতে পারেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। তাদের সকলের জন্য স্যার আইজ্যাক নিউটনের এই কাজ উদাহরণ হয়ে উঠুক।
Discussion about this post