বর্তমানে স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন প্রত্যেকে। সকালে চোখ খুলেই শুরু হয়ে যায় মর্নিং ওয়াক। আমাদের নিত্যদিনের কী খাওয়া উচিৎ বা উচিৎ নয় তার তালিকাটি অল্প বিস্তর সবার জানা। কিন্তু সমস্যাটা হয় বাড়ির কচিকাচাদের নিয়ে। তাদের মনের মতো খাওয়ার নাকি ডায়েট মাফিক খাওয়ার কোনটা জরুরি? এই নিয়ে মা-বাবার চিন্তার শেষ নেই। কারোর তেলেভাজা প্রিয়, কেউ আবার মিষ্টির পোকা। কেউ আবার খাবার দেখলেই ছুট লাগায়। তাদের কোন খাবার পুষ্টি দেবে বা কোন খাওয়ার ক্ষতি করবে তা বুঝে উঠতে হিমশিম খাচ্ছেন মা-বাবা। এইসব চিন্তা থেকে মুক্তি দিতেই শ্রীরামপুর আইএমএ ভবনে আয়োজন করা হয়েছিল শিশুস্বাস্থ্য প্রদর্শনী। সেখানে উপচে পড়া ভিড় জমান মা-বাবারা। প্রায় ১০০ জনের মতো শিশুর নাম তালিকায় আসে।
প্রথমেই হয় বাচ্চাদের ওজন ও উচ্চতাসহ নানা স্বাস্থ্য পরীক্ষা। ডঃ প্রদীপ কুমার দাস ও ডঃ ঈশিতা দাস নিজ দায়িত্বে এই পরীক্ষাগুলো করান। এরপর তাদের শরীরের খুঁটিনাটি দেখেন এক বিশেষজ্ঞ। তৈরী করা হয় স্বাস্থ্য মার্কশিট। এই গুরুগম্ভীর পরিবেশেও খুদেদের কিন্তু মজার হাট বসেছিল একরকম। কেউ স্টেথোস্কোপ কানে লাগিয়ে ডাক্তারের বুকে চেপে ধরছে। কেউ আবার সামান্য ছোঁয়াতেই কেঁদে ফেলছে। কেউ আবার মুখে রাও কাটছে না। যাই হোক বাচ্চাদের খুনসুটির উত্তেজনায় মেতে ওঠেন প্রত্যেকেই।
দুপুর ২ টোয় শুরু হয় শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা। হাজির ছিলেন দেবাঞ্জন সাহা, বৈদ্যনাথ দাস, জগবন্ধু গুছাইতের মতো অভিজ্ঞ শিশু বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকরা বলেন, “হলদে সবুজ সাদা/ খাবে গাদা গাদা।” হলদে অর্থাৎ পেঁপে কুমড়ো জাতীয় সব্জি, সবুজ বলতে রকমারি শাক আর সাদা মানে দুধ ও ডিম। শিশুদের সর্দি-কাশি কিংবা জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলেও করোনা ভাবার কোনও কারণ নেই, আশ্বস্ত করেন চিকিৎসকরা। এরপরই শুরু হয় অভিভাবকদের প্রশ্নের পালা। বাচ্চাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলেন একে একে। শেষপাতে ছিল একটি ছোট্ট অনুষ্ঠান। যেখানে স্বাস্থ্য মার্কশিটের ভিত্তিতে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় বাচ্চারা পুরস্কারও পায়। গ্রুপ এ বিভাগে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয় প্রনীল দুয়ারি, আদিত্য দাস এবং স্বর্ণজিৎ বড়াল। বি বিভাগে যথক্রমে প্রথম থেকে তৃতীয়র শিরোপা প্রাপ্তি মাজি, সোমদত্ত চক্রবর্তী এবং রিয়াংশ মাজিদের মাথায় ওঠে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এই ক্যাম্প বেশ সাড়া ফেলেছে শ্রীরামপুর অঞ্চলে। এই সংগঠন প্রজন্মের পর প্রজন্মকে নানা স্বাস্থ্যমূলক সহায়তা দিয়ে থাকছে পাশে। প্রতি সপ্তাহে তাদের অনাক্রম্যতা প্রতিরোধ টিকা অতি সুলভে পৌঁছে যায় মানুষের কাছে।
Discussion about this post