বাঁকুড়ার এই ছোট গ্রামটির নাম হল দ্বারিকা। মূলত: এখানে মুসলিম ঘর বেশি দেখতে পাওয়া যায়। বেশিরভাগ মুসলিমদেরই আয়ের পরিমাণ খুবই কম। কারণ এখানকার বেশিরভাগ মানুষ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। তবে তাদের এই কম পরিমাণ আয় উৎসবের আমেজ কেড়ে নিতে পারেনি।
তেমন কিছু আহামরি না হলেও এখানে ছোট ইফতারের বাজার দেখতে পাওয়া যায়। দৈনিক খেটে খাওয়া মানুষগুলো সেই বাজার থেকেই নিজেদের জিনিসপত্র কিনে নেয়। আর্থিক উপার্জন এখানকার মানুষদের খুবই কম। এই বাজার পরিদর্শন করলে স্পষ্টতই এই ছবিটা উঠে আসে। কারণ এই ছোট স্থানে হালিম বা শির কোরমা বা কাবাব বা কাচ্চি বিরিয়ানি এই সমস্ত জিনিস খুঁজে পাওয়া যায়না। মূলত কিছু কিছু দোকানে সামান্য ফলমূল, লাচ্ছা ,সেমাই এই সমস্ত জিনিস রাখা হয়।ইফতারের সাথে ভাজাভুজির সম্পর্ক অনন্য। হরেক রকমের ভাজাভুজি যেমন ডিমের চপ, মাছের চপ, মাছ ভাজা এসমস্ত এখানে পাওয়া যায় না। খুবই সাধারণ চপ, বেগুনি, সিঙ্গাড়া এখানকার বাজারে পাওয়া যায়। দ্বারিকার বেশিরভাগ মানুষ তাদের ইফতার সেরে নেয় সামান্য ছোলা, সামান্য ফলমূল, মুড়ি, চপ, শরবত ইত্যাদি দিয়ে। অধিকের সম্ভার এখানে বড্ড কম।
এই বাজারে কোনো জৌলুস নেই। এই বাজারে কোন ভিড় নেই। উৎসবের বাজার মানেই জৌলুস দিয়ে পরিপূর্ণ কোন জায়গা সেই অর্থটা এখানে এসে পাল্টে যায়। সম্পূর্ণভাবে এই স্থানটি সাক্ষী খেটে খাওয়া মানুষদের অক্লান্ত পরিশ্রমের। এখানে খুঁজে পাওয়া যায় আন্তরিকতা ও উষ্ণতা দিয়ে মোড়া সম্পর্কের চাদর। অনাড়ম্বরতা দিয়ে ঢাকা অন্য ইফতারের গল্প বলে যায় দ্বারিকা। শুনতে পাবেন কান পাতলে সেইসব মানুষের গল্প যারা অল্পেতে খুশি থাকে, যারা অল্পেতে ভালো থাকে।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – বাংলা নিউজ
Discussion about this post