শীতের দিনে কেক নিজের স্থান উচ্চে নিয়ে গিয়ে হয়ে ওঠে আরও লোভনীয়। আর এত রকম কেকের মধ্যে বেশিরভাগের মন কেড়ে নেয় চকলেট কেক। বিদেশে কেক হাতের কাছের খাবার ঠিকই। তবে বাংলাদেশে কেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠার গল্প এক ইতিহাস। বর্তমানে পিঠে পুলির সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে কেকও। বিশেষ করে চকলেট কেক। এক সময়ে অবশ্য চকলেট কেক ছিল নাগালের বাইরে। কিন্তু বাংলাদেশে ষাটের দশকে ওভেনে ষাটের দশকে কেক বিস্কুট তৈরি হতো। ঠিক মতো চকলেট কেক অবশ্য তৈরি হতো না। কারণ, প্রয়োজনীয় কোকো পাউডার সেকালে পাওয়া যেতো না।
শোনা যায়, চকলেট কেকের রেসিপি প্রথম পাওয়া যায় ১৮৪৭ সালে। এলিজা লেজলি নামের একজন মার্কিন নারী তাঁর রান্নার বইতে লিখে রেখে যান ঠিকঠাক চকলেট কেকের রেসিপি। তবে তিনি কোকো পাউডারের বদলে ব্যবহার করেছিলেন চকলেটের টুকরো। পরবর্তীতে রীতিমত গবেষণা চলে এই চকলেট কেক নিয়ে। তবে ক্ল্যাসিক চকলেট কেক সবার কাছে সুপরিচিত হয়ে উঠল ১৯২০ সালে। বলা হয়, আমেরিকবাসী প্রথম চকলেট কেকের স্বাদ পায়। তবে সাধারন মানুষের নাগালে চট করে কোনো কিছুই আসে না। ক্রিম সমেত কেকও তার ব্যতিক্রম নয়। সত্তর আশির দশকে ইউসুফ বেকারি, আনন্দ কনফেকশনারির কেক হয়ে উঠেছিল জনপ্রিয়।
এরপর সেই চকলেট কেক ধীরে ধীরে পৌঁছে যায় বাঙালির জিভের ডগায়। মুখে দিলেই শান্তিতে চোখ বুজে যাওয়ার জোগাড়। চকলেট কেকের মধ্যে আবার আলাদা করে জায়গা করে নেয় ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক। উপরে ভরপুর চকলেটের আস্তরণ। সেই থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলার বেকিং শিল্পকে। পৃথিবীতে যে কত রকমের চকলেট কেক আছে তার কোনো ঠিক নেই। প্রথমেই বলতে হয় ট্র্যাডিশনাল ক্ল্যাসিক চকলেট কেকের কথা। এতে কোকো পাউডার বা গলানো চকলেট; উভয়ই ব্যবহার করা যায়। তাছাড়াও চকলেট লাভা কেকও খুব জনপ্রিয় এ সময়ে। কেক কাটলেই বেরিয়ে আসে চকলেটের লাভা। আর বাকি থেকে যায় ব্রাউনি কেকের কথা। ব্রাউনিতে সাধারণ চকলেট কেকের চেয়ে বেশি চকলেট ব্যবহার করা হয়। তুলতুলে না হলেও মনকে আনন্দে স্নাত করিয়ে দিতে সদা প্রস্তুত ব্রাউনি।
বাংলার ঘরে ঘরে যে কোনো উৎসবে এখন কেক বিরাজ করে। জন্মদিন হোক বা বিবাহবার্ষিকী, সন্তান আসার সুসংবাদ হোক কিংবা নতুন বছর সবেতেই উদযাপনে চাই কেক। বর্তমানে কেক বানানোর ওভেন, প্রয়োজনীয় উপকরণ, কেক সাজানোর সরঞ্জাম বেশ সহজলভ্য। তাই দোকান থেকে কেনার অপেক্ষা আর নয়। বাড়িতেই এখন তৈরি করে নেওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের চকলেট কেক। সাথে পাল্লা দিয়ে ছবি শেয়ার চলে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ছবি দেখে জিভে জল আসতে বাধ্য।
Discussion about this post