আজকের সোশ্যাল নেটওয়ার্কের যুগে বইয়ের গুরুত্ব অনেকখানি কমেছে। গুগল খুললেই দেশ বিদেশের খবরও মেলে নিমেষে। চাহিদা মতো বইয়ের পিডিএফ জোগাড়ই সাশ্রয়ের পথ আধুনিক সমাজের কাছে। মোদ্দা কথা ওই চৌকো ভারী খসখসে শব্দওয়ালা বস্তুটি মানুষের হাতে খুব কমই দেখা যায় আজকাল। কিন্তু এই মহামারির যুগে আবারও বই প্রমাণ দিল সে চিরকাল মানুষের বন্ধু ছিল আছে আর থাকবেও।
ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে বহুজন পৌঁছচ্ছেন হাসপাতালে। অক্সিজেনের নলটা লাগানো মুখে। আশেপাশে কাছের মানুষদের মুখগুলোও নেই। চারিদিকে কেমন দমবন্ধ পরিবেশ। আবদ্ধ এই পরিবেশে রুগী ক্রমশ মানসিক অবসাদেরই কবলে পড়ছেন। এই সময়ে তথ্যবহুল, বিনোদনমূলক বিষয়ের উপর বই যদি তার কাছে সহজলভ্য করা হয়, তবে তিনি নেগেটিভ চিন্তাধারা থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে বই জগৎ উপভোগ করতে পারেন। এটা তার মনে ইতিবাচক চিন্তা সৃষ্টি করে তার প্রত্যাশা বাড়াতে পারে। নবী মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের তরফে তাই আস্ত এক গ্রন্থাগার খোলা হল নবী মুম্বইয়ের কোভিড কেয়ার সেন্টারে। এই উদ্যোগ কোভিড আক্রান্তদের মনকে দৃঢ় করছে। রুগীর হাতে স্মার্টফোন থাকলেই এখন বেশি ক্ষতি। সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা সংবাদপত্র জুড়ে শুধুই খারাপ খবরের জমায়েত। এসব থেকে দূরে সরিয়ে রুগীদের মন ভালো করতেই এই বইয়ের সম্ভার। ১০ দিনেরও বেশী সময় ধরে থাকা রুগীরা ইচ্ছে মতো যত খুশি বই পড়তে পারেন। বিভিন্ন শিরোনামের উপন্যাস গল্প রয়েছে এই গ্রন্থাগারে।
প্রথমের দিকে রুগীদের বাড়ি থেকেই বই পাঠানো হত সময় কাটানোর জন্য। আর তা দেখেই এই অনবদ্য ধারণা আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। সেই সুবাদেই সাফায্যের হাত বাড়ায় মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। আজ এখানের হাসপাতালে ভর্তি রুগীরা বেশ মনোযোগেই বই পড়ছেন। আজ রুগীরা শরীরের ওই মারণ ভাইরাসকে সরিয়ে এই পড়াকু ভাইরাস ভেতরে ঢুকিয়ে বাড়িতে পা রাখছেন। অসুস্থদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখার এই অভিনব প্রচেষ্টা সত্যিই সাধুবাদ যোগ্য।
Discussion about this post