সমাজে যখন হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে উচ্চারিত হলেই কোন এক অলিখিত শর্তে সাধারণ মানুষের মনে উঠে আসে অজানা ভয়; সেই সমাজেই সেই ভয় বা শঙ্কা কে মিথ্যে প্রমাণ করে দিলেন বাংলাদেশের লালমণিরহাটের হাতিবান্ধার মানুষ। হাতিবান্ধার মাস্টারপাড়ার রাধাকৃষ্ণ মন্দির এলাকায় ঘটল এক অদ্ভুত ঘটনা। এর পূর্বেও দুই বাংলাতে বিচ্ছিন্নভাবে অসংখ্য ধর্মীয় সম্প্রীতির নিদর্শন চোখে পড়েছে মানুষের। এই ঘটনাটিও তার বাইরে নয়।
হাতিবান্ধায় পনেরো বছর আগে মন্দির কমিটিকে জমি দান করেছিলেন পবিত্র বর্মণ। তিনি একজন ভক্ত হিসেবেই চেয়েছিলেন যে, মন্দির তৈরি হোক। কিন্তু, স্থানীয় মানুষের কথায় সম্প্রতি পবিত্রবাবু অন্য এক মন্দিরের ভক্ত হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন, এবং হাতিবান্ধার মাস্টারপাড়ার মন্দিরের জমিটি তিনি ফেরত চাইছেন। মন্দির কমিটি এবং স্থানীয় মানুষেরা একাধিকবার তাঁর সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বসলেও তাঁর মত বদলানো যায়নি। ফলে শুরু হয়েছে ১৫ বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা মন্দিরটি ভাঙার কাজ।
বহুবিধ প্রস্তাবের পরেও পবিত্র বর্মণ তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে নড়েননি। ফলে চালু হয়েছে মন্দির ভাঙার কাজ। অসংখ্য মানুষ দেখতে আসছেন তাঁদের পবিত্র প্রার্থনার স্থানটিকে। হিন্দু ভক্তদের চোখে জল তো বটেই, মুসলমান ধর্মের মানুষেরাও ধিক্কার জানিয়েছেন এই ঘটনাকে। মুসলমান ধর্মের মানুষদের চোখেও জল দেখা গেছে। তাঁরা যেন শত দুঃখের মধ্যেও গিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন হিন্দু ভক্তদের। এই মানবিক আচরণ, এই সমবেদনা জানানোর মানসিকতা বা বিপরীত ধর্মের সঙ্গে সমানভাবে ব্যথিত হওয়ার ঘটনাটি যেন দুই বাংলাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ধর্মীয় সম্প্রীতির নমুনা।
চিত্র ও তথ্যঋণঃ এল মিডিয়া
Discussion about this post