মানুষটি তার শৈশবে খেলতে খেলতে কারেন্টের শক খেয়ে নিজের হাত-পা সব হারায়। এ যেন কুঁড়ি ফোটার আগে অঙ্কুরেই বিনষ্ট। ৫ বছর বয়েসেই তাঁর সব শেষ মনে করে প্রতিবেশীরা মুখে তখন শুধুই সহানুভূতির ‘আহা রে’। ঠিক তখন থেকেই লড়াই শুরু করে রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ।
দশটা বছর গৃহবন্দি ছিল মানুষটা। নিজের অজান্তেই ধীরে ধীরে কখন যে পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে উঠেছেন জানতেও পারে নি। ধরেই নেওয়া হয়েছিল রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ পরিবারের ওপর নির্ভরশীল হয়েই থেকে যাবেন গোটা জীবন। কিন্তু শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছেয়, জীবনে নিজের মতো করে বাঁচবেন বলে দশটা বছর বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাটানোর পর হাঁটার চেষ্টা করলেন তিনি। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা সফল হল না। কাজেই প্রথমে হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটা শুরু করলেন। তারপর ধীরে ধীরে নিজের পায়ের জন্য অর্ডার দিয়ে জুতো তৈরি করালেন।
দশ বছর বাদে বাইরের জগৎটাকে দেখে কেঁদে ফেলেন রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ। পড়াশুনো শেষ করে এখন তিনি চাকরি করেন। এমন কোনো কাজ নেই যা তিনি করতে পারেন না। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন “মানুষ শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী হয় না, মানুষ মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা চাইলেই দূর করা যায়, কিন্তু মানসিক প্রতিবন্ধকতা দূর করা যায় না।” উনি যদি পারেন, তাহলে আমরা পারবো না কেন? নিজের ভেতর জেদ থাকলেই আমরা পারবো. আজ আমাদের সাথে কিছু ভালো হচ্ছে না, কিন্তু কাল হবেই. শুধু একটু ধৈর্য ধরতে হবে!
তথ্য এবং চিত্র ঋণ – কৃপা বসু
Discussion about this post