কবি জসীমউদ্দিনের লেখায় পাওয়া যায়, “আমার এমন মধুর বাংলা ভাষা, ভায়ের বোনের আদর মাখা…।” তবে যতোই এ ভাষা মধুর হোক না কেন আপন মানুষ তার কদর বোঝে কম। তবে বিদেশের এক উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলা ভাষা জায়গা করে নিচ্ছে নতুন রূপে। সম্প্রতি জানা গিয়েছে কলম্বিয়া কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নয়া উদ্যোগের কথা। কর্মকান্ডটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বেঙ্গলি লাইব্রেরি সিরিজ।’ এ কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা হলেন কলম্বিয়া কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার গায়েত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। আর তার পাশাপাশি এ উদ্যোগে ইতিমধ্যেই সামিল হয়েছেন নিউইয়র্ক হোম ফার্নিশিং কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং লক্ষ্মী টি গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুদ্র চ্যাটার্জী। একেবারে প্রথমে প্রকাশ হতে চলেছে তিনটি বাংলা বইয়ের ইংরেজি সংস্করণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কালান্তর’, মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের লেখা ‘চিলেকোঠার সেপাই’ এই তিনটি বই নিয়েই বেঙ্গলি লাইব্রেরি সিরিজের কাজ শুরু হচ্ছে রুদ্র চ্যাটার্জীর সহায়তায়। তার এই সামিল হবার কারণ তার বাবা দীপঙ্কর চ্যাটার্জির বাংলার ছাত্র হবার কারণে।
গায়েত্রী স্পিভাক এবং চ্যাটার্জী দ্বয় ছাড়াও রয়েছেন এই প্রজেক্টের এডিটররা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক অভিজিৎ গুপ্ত, এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক থিবট ডি হাবার্ট নিযুক্ত হয়েছেন বেঙ্গলি লাইব্রেরি সিরিজের এডিটর হিসেবে। এছাড়াও বাংলার গর্ব হিসেবে এই সিরিজের ফাউন্ডার এডিটর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন বিখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ। বাংলা সাহিত্যকে এরূপ ভাবনা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য। কেবলমাত্র অনুবাদ নয় যথেষ্ট গবেষণা চালিয়ে একটু একটু করে পথ এগোচ্ছে বাংলা সাহিত্যের নতুন দিগন্ত ‘বেঙ্গলি লাইব্রেরি সিরিজ।’
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য বাংলার পাঠ্য ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা। ওনারা জানিয়েছেন, “বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির উপকেন্দ্র এবং সমস্ত সৃজনশীল মননের মেলবন্ধন এই বাংলা সাহিত্য। তাই তাকে সংরক্ষণের এ এক অনন্য চেষ্টা।” এই প্রজেক্টের মাধ্যমে উঠে আসতে চলেছে বাংলার ঐতিহাসিক এবং দার্শনিক বেশ কিছু নিদর্শন। গোটা সমগ্রটি প্রকাশ হবে দ্বিভাষিকভাবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পাওয়ার সময় থেকেই বাংলা ভাষার সাথে বিশ্বের পরিচয়। তবে এই প্রজেক্টের মাধ্যমে সেই পরিচয় এক নতুন রূপ পেতে চলেছে।
Discussion about this post