পরিস্থিতির চাপে পড়ে কিংবা অন্যান্য নানান কারণে অনেক সময় আমরা আমাদের ‘নেশাকে পেশা’ বানাতে পারিনা। এ নেশা কিন্তু কোনো মাদক দ্রব্য নয় বরং নিজের শখ বা নিজের ভালো লাগার জায়গা। অনেক সময় এই শখই আমাদের উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দেয়৷ এমনই এক অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী রইলেন ব্রিটেনের এক ব্যক্তি। ৪৩ বছর বয়সী এই ব্যাক্তির নাম ডগলাস স্মিথ। উনি পেশায় এক নামী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মকর্তা।
ছোট থেকেই চাষ আবাদ তার ‘নেশা’। এ নেশা কিন্তু যে সে নেশা নয়। এই নেশাই তাকে পাইয়ে দিয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের খেতাব। নিজের কাজের পাশাপাশি ফাঁকা সময়ে তিনি টুকটাক সবজি ফলাতেন। এবারে তিনি ফলিয়েছিলেন টমেটো। এই টমেটোগুলো বাজারে পাওয়া সাধারণ টমেটোর থেকে একটু আলাদা। আকারে এগুলো ছোট চেরির মতো। এর পোশাকি নাম চেরি টমেটো। তিনি বীজ থেকে চারা গাছ বানান প্রথমে। পরে সেই চারাগাছের লালন পালন করে টমেটো ফলান।
তার সাফল্যের রাস্তা কিন্তু একেবারেই মসৃণ ছিলনা। একটা গাছের পরিচর্যায় লাগে প্রচুর সময়। যত্নে একটু খামতি থেকে গেলে ফলন না হওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়। নামী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী হওয়ায় এমনিতেই কাজের চাপ খুব বেশি। অনেকটা সময় অফিসে কাটাতে হত তাকে। তার পরে সময় বের করে গাছের পরিচর্যা করতেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে ছুটির দিনে তিন থেকে চার ঘণ্টা ব্যয় করতেন গাছের জন্য। টমেটোগুলো তোলার সময় স্থানীয় পুলিশকেও খবর দিয়েছিলেন স্মিথ। যাতে সত্যিই গাছটির একটি ডালে এতগুলো টমেটো ফলেছিল, তার প্রমাণ থেকে যায়।
এত খাটনি বিফলে যায়নি তার। ওই গাছের একটা ডালেই ধরেছিল ৮৩৯ টি টমেটো৷ যার মাধ্যমে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন গিনেস বুকে। স্মিথের আগে টমেটো ফলানোর রেকর্ড ছিল গ্রাহাম ট্যান্টার নামে এক ব্যক্তির। ২০১০ সালে গ্রাহাম একটি ডালে ৪৪৮ টি টমেটো ফলিয়ে রেকর্ড করেছিলেন। ১১ বছর পর গ্রাহামের রেকর্ড ভেঙে তার দ্বিগুণ টমেটো ফলিয়ে নতুন রেকর্ড বানিয়েছেন স্মিথ। এটাই তার প্রথম সাফল্য নয়। এর আগেও ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় টমেটো গাছ বানানোর রেকর্ড রয়েছে স্মিথের ঝুলিতে। যদি আমরা সবাই আমাদের ‘নেশা’কে পেশার রূপ দিতে পারতাম তাহলে হয়ত কর্মক্ষেত্র আমাদেরকে আরও বড় সাফল্য এনে দিত। হয়ত পেশাটাও নেশার মতোই আনন্দদায়ক হয়ে উঠত।
Discussion about this post