মহিলার হাতে ঝাড়ু দেখেছেন কিংবা রান্নার খুন্তিও দেখেছেন। কিন্তু মাথায় বোঝা নিয়ে কুলিগিরি করতে দেখেছেন কখনও? এবার সেটাও দেখতে পাবেন। মধ্যপ্রদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাটনি রেলওয়ে স্টেশন। সেখানে শুধু পুরুষ কুলি নয় লাল পোশাক ও ব্যাচ লাগিয়ে ঘোরাফেরা করেন এক মহিলা কুলিও। অর্থাৎ এই স্টেশনে পা রাখলেই আপনি বুঝবেন পুরুষ হোক কি মহিলা ক্ষমতায় সবাই সমান। আজ তেমনই এক মহিলার কাহিনী বলব যে স্টেশনের এমাথা থেকে ওমাথা ছুটে বেড়ায় যাত্রীর মালপত্র নিয়ে।
ব্যাচ নম্বর ৩৬। স্টেশন চত্বর জুড়ে এটাই হল তাঁর পরিচয়। সন্ধ্যা মারাভি। জব্বলপুরের কুন্দম গ্রামেই তার শ্বশুরবাড়ি। ২০১৯ সালে হঠাৎই স্বামী মারা গেলেন। শ্বাশুড়ি আর তিনটে সন্তানের খাওয়া পরার দায়ভার সামলাতে গিয়ে একরকম হিমশিম খাচ্ছেন সন্ধ্যা। সংসারের সবটুকু দায়িত্ব যে তখন তাঁরই ঘাড়ে। সাতপাঁচ না ভেবে একরকম বাধ্য হয়েই পরিশ্রম করতে নেমে পড়লেন কুলির বেশে। মাথায় তুলে নিলেন ভারী ভারী মালপত্র। চিরাচরিত প্রথা ভেঙে মহিলা হয়েও পা বাড়ালেন এই পেশায়। হয়ে উঠলেন ভারতের প্রথম মহিলা কুলি।
সংসারের যাবতীয় ঘরের কাজ সামলে রোজ বেরিয়ে পড়েন সন্ধ্যা। প্রায় ২৫০ কিমি পথ পেরিয়ে পৌঁছন স্টেশনে। শুরুর দিকে ৩৯ জন পুরুষের সাথে পা মিলিয়েই একা সন্ধ্যা কুলি হয়ে ছুটে চলেছেন। রেল কর্তৃপক্ষ তাঁর এই দুঃসাহসিকতার কথা ট্যুইটারে প্রচারও করে। আর তাতেই বেশকিছু মানুষ বাহবা না দিয়ে কটাক্ষ করেন। পিতৃতান্ত্রিকতার বেড়াজাল থেকেই বলেন তাঁরা সন্ধ্যার এই পেশাটি গ্রহনের কোনো যোগ্যতা নেই। যদিও সন্ধ্যা এসব মন্তব্যকে তোয়াক্কা করেনা। কারণ পেটের জ্বালায় কুলিগিরি পেশাটিকেই সে আপন করেছে। দিন আনা দিন খাওয়া এক পরিবারের মূল কান্ডারী সে। তাই শরীরের হাড়ভাঙা খাটুনিকেও তিনি হাসিমুখে বরণ করেছেন।
Discussion about this post