পাঁচ হাজার বছরের মধ্যে প্রথমবার মিশরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি দাগওয়ালা হায়েনার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ম্যামালিয়া একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। মিশর-সুদান সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ‘ক্রোকুটা ক্রোকুটা’ নামের এই হায়েনাটি পাওয়া যায়। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে, গবাদি পশু আক্রমণের কারণে স্থানীয়রা সেটিকে হত্যা করে। দাগওয়ালা হায়েনা সাধারণত আফ্রিকার সাব-সাহারান অঞ্চলে দেখা যায়। এ আবিষ্কার মিশরে এদের উপস্থিতি নিয়ে নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে। প্রধান গবেষক ড. আবদুল্লাহ নাগি জানান, প্রথমে বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হলেও ছবি ও ভিডিও দেখে তিনি হতবাক হন।

গবেষণা অনুযায়ী, এই দাগওয়ালা হায়েনার পরিচিত পরিসর থেকে ৫০০ কিলোমিটার উত্তরে এটির উপস্থিতি পরিবেশগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। ১৯৮৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্যাটেলাইট তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওই অঞ্চলের বৃষ্টিপাত ও উদ্ভিদের পরিমাণ বেড়েছে। ফলে শিকারী প্রাণীদের জন্য অঞ্চলটি বেশি বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে। গবেষকরা ধারণা করছেন, এ পরিবেশগত পরিবর্তন ও উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা হয়তো হায়েনার অভিগমণের পথ তৈরি করেছে। তবে কেন এই হায়েনাটি এত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিল, তা এখনও রহস্য।

দাগওয়ালা হায়েনা শক্তিশালী দলের অংশ হলেও একা ভ্রমণ করতেও সক্ষম। এরা দিনে প্রায় ২৭ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারে এবং খাবারের সন্ধানে যাযাবর গবাদি পশুদের গতিবিধি অনুসরণ করে। গবেষকরা বলছেন, এই হায়েনার মিশরে উপস্থিতি পরিবেশগত পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ। তবে এ অঞ্চলে এর স্থায়ী বসবাসের সম্ভাবনা এবং উত্তর দিকে বিস্তার নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
Discussion about this post