মঙ্গলবার ভোর ছয়টায় ঢাকার বঙ্গ বাজারে কাপড়ের দোকানে লেগেছে বিধ্বংসী আগুন। অগুণতি মানুষের শত শত কোটি টাকা পুড়িয়ে ছাই হয়ে গেল। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইঞ্জিন কাজ করছে। আগুন লাগার খবর পেয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যে যার মতো দোকান থেকে জিনিসপত্র বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। বঙ্গবাজারের আশপাশে সব রাস্তায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যান চলাচল। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া শাখার কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ৬টা ১২ মিনিট থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।
মাইকে এলাকাবাসীকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি সম্মিলিত সাহায্যকারী দল, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল ও একটি হেলিকপ্টার কাজ করছে। আইএসপিআর এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু হায়দার মো. রাসেলুজ্জামান এই তথ্য জানান। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে পরবর্তীতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানা যাবে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের আধিকারিকরা। এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী বলেন, রাতে মার্কেটের ভেতরে কোনও লোকজন থাকে না। তবে মার্কেটে ভেতর দারোয়ান থাকে। কেউ আটকে পড়েছেন কিনা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। সবাই আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত রয়েছে।
বঙ্গবাজার মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ ১০ কোটি মার্কেট, আদর্শ মার্কেট- এই চারটি মার্কেট এক জায়গায় হওয়ায় মূলত সবগুলোকেই লোকজন বঙ্গবাজার মার্কেট হিসেবে ডেকে থাকেন। এই চারটি মার্কেটে প্রায় তিন হাজার দোকান রয়েছে। প্রতিটি মার্কেটে ২৫ থেকে ৩০ জন করে দারোয়ান রয়েছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানান। বঙ্গবাজার মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মার্কেটের পূর্ব দিক থেকে আগুন লাগে। তবে কোথা থেকে লেগেছে, কীভাবে লেগেছে বিষয়টি এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নীলক্ষেত এলাকা থেকেও দেখা দিয়েছে ধোঁয়া। সকালে আগুন লাগার খবর পেয়ে অনেক ব্যবসায়ীরা অনেকেই ঘটনাস্থলে এসে জিনিসপত্র বের করতে না পেরে শোকে মুহ্যমান। চলমান রমজান এবং সামনের ঈদে বেচা বিক্রি তো দূরের কথা, সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেটে বিভিন্ন রকমের কাপড় থাকায় থাকায় আগুনের ব্যাপকতা বেশি হয়। তবে অভিযোগ এর আগেও আগুন লেগেছে এই বাজারে। বারংবার সতর্ক করা হলেও তাতে আমল দেয়নি বাজার কর্তৃপক্ষ। ছিল না কোন অগ্নিনির্বাপণ ব্যাবস্থাও।
Discussion about this post