বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৪৮ কেজি বিভাগে জয়ী হয়ে স্বর্ণপদক জিতলেন ২২ বছরের নীতু ঘংঘাস। পদক জয়ের সোনালি আভায় রাঙ্গিয়ে দিলেন নিজের গ্রাম ধননা, ভিওয়ানি, হরিয়ানা সহ গোটা দেশকে। প্রথম রাউন্ডের শুরু থেকেই দাপুটে আক্রমণ ছিল নীতুর। দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রতিপক্ষ মঙ্গোলিয়ার লুতসাইখান আলটানসেটসেগ কিছুটা ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষ অবধি তৃতীয় রাউন্ডে নিখুঁত কয়েকটি পাঞ্চ দিয়ে ৫-০ স্কোর করে ধূলিসাৎ করে বিজয়ী হয়ে বাবা ও সর্বক্ষণের সমর্থক জয় ভগবানের স্বপ্ন সার্থক করলেন কন্যা নীতু।
কন্যার জয়ে রীতিমত খুশিতে আত্মহারা বাবা জানালেন নীতুর অনুশীলনের দিনের কঠিন সময়ের কথা। সালটা ২০১২। ট্রেনিং এর উদ্দেশ্যে গ্রাম থেকে ভিওয়ানি বক্সিং ক্লাব এ পৌঁছানোর সেদিনের কিশোরী নীতু তখনও স্কুল ছাত্রী। কড়া মাপের ট্রেনার জগদীশ স্যারের অধীনে শুরু হল কঠিন অনুশীলন। “কোচ হিসেবে সবসময়ই খোঁজ থাকে আসল প্রতিভার। নীতুর প্রথমবার অনুশীলনেই ওর মধ্যে থাকা সাবলীল বক্সিং ক্ষমতা নজরে আসে এবং সেই ক্ষমতাকে আরো জোরালো করার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় নীতুকে তৈরী করার কাজ’” – জানান জগদীশ। তাঁদের এই চেষ্টার ফসলই আজকে নীতুর স্বর্ণপদক জয়ের প্রেক্ষাপট।
প্রেক্ষাপট আরও একটা আছে। নীতুর বাবা ভগবান প্রথমের দিকে তাঁর চাকরি, নীতুর ট্রেনিং সবটা একসাথে সামলালেও শেষমেশ দেশের জন্যে সোনা জয়ের স্বপ্নে ভর করে তাঁকে চাকরি ছাড়তে হয়। প্রায় দশ বছরের অধ্যাবসায়, আর্থিক টানাপোড়েন আর কঠিন পরিশ্রম গত বছর কমনওয়েলথ গেমসে সোনা এনে দিলেও দুবারের যুব চ্যাম্পিয়ন নীতুর বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জয় এতদিন ছিল অধরা। আজ বাবা-কন্যার স্বপ্ন জয় বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে ভারতের ঝুলিতেও এনে দিল এগারো নম্বর স্বর্ণপদকটি।
প্রচ্ছদ ছবি – olympics.com, Eddie Keogh
Discussion about this post