হাতের আঙুলে সেই চিরাচরিত কালো ধাব্বা পড়ছে এক এক করে। চলছে নির্বাচনের লড়াই। ভোটের পরেই ভোটদাতার তর্জনীটিতে বেশ মোটা করেই দাগ দিয়ে থাকেন ভোটকর্মীরা। কালি নিয়ে এতকিছু বলছি কারণ আজ এই ভোটের কালিটির বিশেষত্ব আলোচনা করব। কী এমন কারণে এটি এতটা টেকসই যে সাবান জলেও ধোওয়া যায় না। আবার ঘষলেও ওঠে না। চলুন আজ তবে ভোটের কালি নিয়ে একটু জেনে নেই।
না এটা কোনো ম্যাজিক নয়, সাদামাটা রাসায়নিক ফর্মুলা। এই ফর্মুলাটি গোপন রাখার চেষ্টা চললেও পরে প্রকাশ পেয়েছে। সিলভার নাইট্রেট আর পাতিত জলের মিশ্রন। কিছুটা অ্যালকোহলও মেশানো থাকে তাই চট করে শুকিয়ে যায় এটি। মিশ্রনটি দেখতে বেগুনি হলেও অতিবেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে এলেই বদলে হয় কালো। চামড়ায় একটা বিশেষ অধঃক্ষেপ তৈরী করে যা কোনোভাবেই তোলা যায়না। এই সিলভার নাইট্রেটের ঘনত্ব যত বাড়বে তত বেশি টেকসই হয় এই কালি। আমাদের দেশে এর ১০-১৮% সিলভার নাইট্রেট পাওয়া যায়। তবে এমন ভাবার কোনো মানে নেই যে বিশ্বের সব ভোটেই এই কালি ব্যবহার হয়। লাতিন আমেরিকা সুরিনামে এই কালির কমলা রঙটি ব্যবহার হয়।
র্জনীর নখসহ পুরো গাঁটটি কালি চিহ্নিত করা হয় প্রায় সব গনতান্ত্রিক দেশে। এটিকে ‘অমোচনীয় কালি’ বা ‘invisible ink’ বলে। কর্ণাটকের মহীশূরের ‘মাইসোর পেইন্টস অ্যান্ড বার্ণিশ লিমিটেড’ থেকেই এই কালির সরবরাহ হয়। ভারতে ১৯৬২-এর তৃতীয় নির্বাচনে এই কালি প্রথম ব্যবহার হয়। এর প্রসার এতটাই যে নির্বাচনের সময়ে ভারত থেকে এই কালি থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নাইজেরিয়া ও সাউথ আফ্রিকাতেও পাঠানো হয়। বর্তমানে নানা উপায়ে জোচ্চুরি করতে এই কালি হাত থেকে তুলে ফেলার পদ্ধতি বেরিয়েছে। তাই সতর্ক হচ্ছে প্রশাসন। এই ধরণের অপরাধ রুখতে নাগরিকদেরও সজাগ হওয়া অবশ্যিক।
Discussion about this post