আগে একচালাতেই ছেলে মেয়ে নিয়ে আসতেন মা দুর্গা! তারপর পাঁচচালার প্রচলন হল কীভাবে? পুজো তো দরজায় কড়া নাড়ছে। যদিও এবারে পুজোর আবহ বাকি বছরগুলোর মত জাঁকজমকপূর্ণ নয়। করোনাসুর তার দাঁত নখ বের করে একে একে বাড়িয়েই চলেছে মৃত্যু মিছিল। আতঙ্কে কার্যত কাঁটা বিশ্ববাসী। তবুও মা তো আর মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারেননা। তিনি সপরিবারে পাঁচচালা চালা সাজিয়েই আসছেন। হ্যাঁ পাঁচচালা! শুরুতে মা আসতেন একচালায়। অর্থাৎ একটি কাঠামোতেই ছেলে মেয়ে নিয়ে মর্ত্যে পাড়ি দিতেন মা।
মাঝে দেবী দুর্গা, তার দুপাশে লক্ষ্মী সরস্বতী এবং নীচে কার্তিক গনেশ৷ এক পা অসুরের বুকে তুলে পদ্মের উপর বা বাহনের ওপর অবস্থান তাঁর। আজও যৌথ পরিবারের পুজোতে বা বিভিন্ন রাজবাড়িতে এই এক চালার প্রতিমা দেখা যায়। কিন্তু হাল আমলের পুজোয় এক চালার চেয়ে পাঁচ চালার প্রতিমারই বেশি রমরমা। অর্থাৎ মাঝে দেবী দুর্গা, তার পাশে আলাদা আলাদা চারটি কাঠামোয় তাঁর ছেলে মেয়েরা।
দীর্ঘদিনের চলে আসা ঐতিহ্য ও সাবেকিয়ানা ভেঙে এই প্রথার প্রথম প্রচলন করেন গোপেশ্বর পাল নামের একজন প্রতিমা শিল্পী। ১৯৩৩ সালে কুমারটুলি অঞ্চলের এক সার্বজনীন দুর্গা পূজায় তিনি প্রথম একচালা কাঠামো ভেঙে পাঁচচালার দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ করেন। বারোয়ারি পুজো ও তাবড়-তাবড় পুজো কমিটি প্রতিমা নির্মাণের এই ঢঙকে লুফে নেয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে কমতে থাকে একচালার ঠাকুরের একচেটিয়া রাজত্ব। আসলে এই একচালার ঠাকুরে একটা নির্দিষ্ট মাপের বেশি বড় কাঠামো করা সম্ভব হতনা। আর আজকাল তো পুজোর থিমই হয় ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্গা’। এভাবেই তাই সন্তানদের থেকে আলাদা করেই দুর্গা প্রতিমা তৈরির চল শুরু হয়।
Discussion about this post