পুজো এক্কেবারে দোরগোড়ায়।কেনাকাটা এগোচ্ছে জোরকদমে।তবে আসন্ন শারদোৎসবে সাধারণের উদ্দেশ্যে কি বার্তা দিলেন তাঁরা?
অরুণ কুমার চক্রবর্তী, কবি, ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানটির স্রষ্টা, ভারত – প্রতিবারের মতো এবারেও দেবী দুর্গার আরাধনায় মেতে উঠবে বাঙালি। আর মাত্র সাতটি দিন। তবে শুধু তো বাঙালির মধ্যে নয়,মহাশক্তির আরাধনা ক্রমশই সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়েছে। নারীই চালিকা শক্তি। সেই নারীকেই পুজো করা হয় দেবী দুর্গা রূপে। আমাদের অসাধারণ সংস্কৃতিরই অংশ। তবে পুরাণ ভুলেছে নতুন প্রজন্ম। সেইসবের জন্য সময় ও তাদের নেই। কিন্তু দেবী তো স্বয়ং মহাশক্তি। তাঁকে বুঝতে হবে বিদ্যে-বুদ্ধি, সাহসিকতা শিক্ষা-দীক্ষা দিয়ে। দেবী দুর্গা আমাদের অন্তরে বিনয়ের সঙ্গে। আমাদের বিরুদ্ধে যা কিছু বিরূপ সাহসিকতা দিয়ে সেগুলোকে উপেক্ষা করে দেবী শক্তিকে অন্তরে পৌঁছে দিতে হবে। এভাবেই তো পরম্পরা চলে আসছে। এই যে খারাপ সময়, সমস্ত পৃথিবী আক্রান্ত, আতঙ্কিত তবুও কিন্তু আমাদের লড়াই চলছে। কিন্তু এই যে মাঝে মাঝেই মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি হারাচ্ছে। আমরাই বিভাজন সৃষ্টি করছি। সে সবকেও হারিয়ে দিতে হবে। আমাদের চারপাশে যা কিছু অশুভ তাদেরকে দমন করতে হবে শুভশক্তির আরধনা করে। তৈরি করতে হবে একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী। এটাই আমার একান্ত প্রার্থনা দেবী দুর্গার কাছে। সবার পুজো ভালো কাটুক। সবাই সুস্থ থাকুন, জয় মা, জয় দুর্গা।
শোভন আশরাফ, সঙ্গীতশিল্পী, গল্প, বাংলাদেশ –
শারদীয় দুর্গাপূজা আমার মনে হয় একটা অন্যরকম উৎসবের আবহ সৃষ্টি করে বাঙালি জীবনে। এপার বাংলা বা ওপার বাংলা বলে নয়, দুই বাংলাই বর্ণিল হয়ে ওঠে এই সময়টা! অন্য সময়ের তুলনায় গত বছর এবং এ বছরের শারদীয় উৎসব আলাদা। কেননা, করোনা প্রাদুর্ভাব এর কারণে অজস্র মৃত্যুর সাক্ষী আমরা। যেখানে মানুষে মানুষে মিলেমিশে উৎসবে শামিল হওয়ার ব্যাপারটা কেমন যেন ফিকে হয়ে যাবার মত অবস্থা হয়েছে।
কিন্ত যতই বিপদ আসুক। আলোর দেখা মিলবেই। জীবনের আনন্দ থেমে যাবেনা যেতে পারে না। সবাই সতর্ক থেকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই সার্বজনীন উৎসবে শামিল হবে সে প্রত্যাশাই থাকবে আমার। জয় হোক বাংলার। জয় হোক বাংলার চিরন্তন উৎসবের।
অ্যানি আহমেদ, সঙ্গীত শিল্পী, আ ডট ইন দ্য স্কাই, ভারত –
প্রথমেই শারদীয়ার শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ভালোবাসা জানাই ডেইলি নিউজ রিলের সকল সদস্য পাঠকসহ, আমার প্রিয় মানুষ জন দুই বাংলার শ্রোতা বন্ধুদের। কাশফুলের সৌন্দর্যের সাথে শরতের আকাশ, মহালয়াও এবার জানান দিল এই তো আর কটা দিন বাদেই পুজো। কিন্তু ভয়ের বিষয় একটিই। মহামারীর নতুন ঢেউও সাথে হাজির।
সত্যিই ভীষণ মনে পড়ে পুরোনো পুজোর কথা। যখন দিনগুলো স্বাভাবিক ছিল। বন্ধুবান্ধব, রাত জেগে প্যান্ডেল ঘুরে ঠাকুর দেখা, পরিবার আত্মীয়-স্বজন, কাছে দূরেবেড়াতে যাওয়া সব মিলিয়ে মিশিয়ে কত হই হুল্লোড়!আর ২০২০ থেকেই মহামারীর দাপটে নিউ নরমাল। কিন্তু বাঙালিকে আটকানো কি অতই সহজ! করোনার সব বিধি নিষেধ-মাস্ক-স্যানিটাইজার সবকিছু মানতে হলেও পুজো দেখতে রাজি।তবে এই উৎসবের দিনেও যারা আনন্দে ভাগিদার হতে পারছে না, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্বও আমাদের।দুর্গাপুজা তো শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বাঙালির মহা মিলন! তাই পুজোয় এই আনন্দটুকু ভাগ না করলে চলে?”সকলের তরে আপনি” কথাটি সার্থক তো তখনই হবে। শুনেছি ওপার বাংলায় কোনো কোনো জায়গায় ভীষণ বড় করে আয়োজন করা হয় দুর্গাপুজোর। ইচ্ছে আছে কোন না কোন দিন সামিল হবো। তবে এই দুর্গাপুজোয় আনন্দে থাকার চেষ্টা করুন, তাহলেই সুস্থ থাকবেন ভেতর থেকেও। শুভ শারদীয়া। প্রণাম ও ভালোবাসা রইল।
সোহেল রানা, কর্ণধার, অর্কিড ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া, ভারত –
দুই বাংলা ও বিশ্বের সকল বাঙালিদের শারদীয়ার প্রীতি শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। সকলে নিজের পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সুখ, আনন্দ এবং হৃদয়পূর্ণ ভালোবাসা দিয়ে এই শারদীয়ার উৎসব উদযাপন করুন। প্রার্থনা করি এই শারদীয়ার শুভ লগ্নে সারা পৃথিবী যেনো কো-১৯-এর প্রকোপ থেকে রেহাই পায় এবং শারদীয়ার স্নিগ্ধ ও পবিত্র বাতাসে সকলের পরিবার খুশির জোয়ারে ভরে উঠুক। একটি সুখ এবং শান্তিপূর্ণ বছরের কামনা করি। মা দুর্গা আপনাদের সকল প্রত্যাশা আলোকিত করুক ও সকলের জীবনকে আরো সুখময় করে তুলুক। শুভ দুর্গা পূজো!
Discussion about this post