ফাতিমা আসলা। জন্ম হওয়ার তিনদিনের মধ্যে ধরা পড়েছিল অস্টিওজেনেসিস। শরীরের এক বিরল রোগ। ২৬ বছরের ফাতিমার কোমরের নিচের অংশ থেকে বাকি শরীরের ৬৫ শতাংশ অংশ অক্ষম। সাধারণ মানুষের তুলনায় ফাতিমার শরীরের হাড়গুলিও অনেক বেশি ভঙ্গুর। ফাতিমা হাঁটতে পারেন না। তাঁর সবসময়ের সঙ্গী হুইলচেয়ার। কিন্তু মজার বিষয় হল, হঠাৎ আমরা ফাতিমার কথা বলছি কেন? কারণ ফাতিমা আর পাঁচজন প্রতিবন্ধী মানুষের মত নন। বলা ভালো তিনি নিজেকে অসহায়, দুর্বল বলে কখনো দেখতেই চাননি। তিনি একজন সফল ডাক্তার। ছোট থেকে অসুস্থতা, প্রতিবন্ধকতা পিছু না ছাড়লেও, কখনই তাঁর জীবনে বাঁধা হয়নি। যন্ত্র আর ওষুধের উপর সারাজীবন ধরে নির্ভরশীল হয়েও সেই নির্ভরশীলতা ফাতিমার মনোবল ভাঙতে পারেনি।
ছোটবেলায় ফাতিমা কোন বিশেষ স্কুলেও পড়াশোনা করেননি, নিজেই তিনচাকার সাইকেল চালিয়ে অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের মতই স্কুলে যেতেন। কোয়াট্টামের এনএসএস মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফাতিমা স্নাতকতা করেছেন হোমিও মেডিসিন এবং সার্জারিতে। বর্তমানে এই হাসপাতালেই ফাতিমা কর্মরত। অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি তিনি ঘুরে ফেলেছেন প্রায় গোটা ভারত। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্বামী।
২০২০ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর আত্মজীবনী, ‘নীলাভুপোল চিরিকুন্না পেনকুট্টি’। যার ইংরেজি অর্থ ‘এ গার্ল উইথ টুইলাইট স্মাইল’। কেরালার মেয়েদের নিয়ে সাম্প্রতিক সমস্ত সাম্প্রদায়িক বিতর্ককে ভুলিয়ে দিয়ে আলো দেখাচ্ছেন গোধূলী সন্ধ্যের হাসি মাখা মুখে ফাতিমা আসলা।
চিত্র ঋণ – Prohor.in
Discussion about this post