জব চার্নক ১৬৯০ সালে কলকাতা প্রতিষ্ঠা করেছেন এটা অনেক পন্ডিতই বলে থাকবেন। তবে কিছু ঐতিহাসিকের মতে আগে ১৬৮৬ সালেই হুগলি থেকে ইংরেজরা এসেছিল কলকাতায়। শোনা যায় ১৬৯১ সালে ১০ ই ফেব্রুয়ারি জব চার্নকের তত্ত্বাবধানে ইংরেজ কুঠি স্থাপন করল সুতানুটিতে। ধীরে ধীরে সামান্য জনসংখ্যা বাড়ল। তবে জব চার্নক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সূত্রে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে শোনা যায় সঠিক সময়ে তার বৈবাহিক জীবনের নাকি সূচনা হয় নি।
আলেকজান্ডার হ্যামিলটনের লেখা বই ‘এ নিউ অ্যাকাউন্ট অব দি ইস্ট ইন্ডিয়া’ থেকে জানা যায় যে ১৬৬৪ সালে গঙ্গার ধারে পাটনায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কুটিরে ছিলেন। সেই কুটিরের অধ্যক্ষ রূপে নিযুক্ত ছিলেন। গঙ্গার ধার বরাবর তার পারিষদদের নিয়ে ঘুরছিলেন। এমন সময় তিনি দেখলেন, একটি শশ্মান ঘাটে সুন্দরী মেয়ে জোর জবরদস্তি করে একজন বয়স্ক মানুষের চিতায় তোলার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সে চিৎকার করছে। বহু মানুষ সেখানে সেই সতী হওয়ার দৃশ্য উপভোগ করছে। ভাঙা বাংলা হিন্দি মিশিয়ে জব চার্নক বিষয়টি জানতে পারেন। নিজে একাই লড়াই করে তাদের কবল থেকে মেয়েটিকে রক্ষা করে নিজের কুটিরে নিয়ে যায়। তাকেই তিনি পরবর্তী সময়ে সহধর্মিনী হিসাবে জীবনে জায়গা দেন। তাদের চারটি সন্তানও জন্ম গ্রহণ করেছিল। অনেকের মতে তার স্ত্রীর নাম ছিল মারিয়া। ড: প্রতাপচন্দ্র জব চার্নকের স্ত্রীর নাম দিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলা আবার সুবোধ ঘোষ নাম দিয়েছিলেন ‘ লীলা’! শোনা যায় চার্নক নিজের কোম্পানির কুটিরে এই মহিলাকে রাখার জন্য অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হন।
অনেকেই তার এই সতী উদ্ধার করে বৈবাহিক সম্পর্কের বিষয়টি বিশ্বাস করতে চাননি। যেমন হলওয়েল সাহেব। যিনি কলকাতার কালেকটর হিসাবে কিছু দিন কাজ করেন। কেউ কেউ তার উপপত্নী থাকার কথাও বলে থাকেন। তবে জবচার্নক একজন দক্ষ প্রশাসনিক কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন বটে। কলকাতা শহরের সঙ্গে তার নাম জুড়ে যেমন থাকে। তেমন নিজের জীবনে ভারতীয় এক রমণীকে বিশেষ জায়গা দিয়েছিলেন। তা ইতিহাসের পাতায় প্রামাণ্য পাওয়া যায়।
Discussion about this post