“বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ নেহাত ছিলেন বোকা! নাহলে কেউ শখ করে হয় বাংলা বইয়ের পোকা?” সত্যিই কি বাংলা চর্চা করা আজকাল বোকামি? সাম্প্রতিক একটি শো তে আরজে অয়ন্তিকার বক্তব্য নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। বক্তব্যটি ছিল, “বাংলা মিডিয়ামে পড়ে কোনো ছাত্রছাত্রী কি কর্পোরেট সেক্টরে ভালো কোনো কাজ করতে পারবে?” এ কথা নিয়ে বাংলা বনাম ইংলিশ মিডিয়াম তর্কে মত্ত সোশ্যাল মিডিয়া।
ঠিক এই প্রশ্নের জবাব বহুদিন আগেই দিয়েছেন তন্ময় চক্রবর্তী। না, যদিও এই প্রশ্নের উত্তর হিসেবে সরাসরি এর কোনো সম্পর্ক নেই। তবে তার এই চিন্তাকে বৈপ্লবিক চিন্তায় সামিল করলে ভুল কিছু বলা হবে না। তার সিদ্ধান্ত ছিল বাংলায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়া। এ কথা শুনে তার সহপাঠীদের চোখ কপালে উঠে গেছিল প্রায়। উচ্চস্তরের এ পরীক্ষা বাংলায় কেউ দিতে পারেন বলে কেউ কখনো শোনেনি। তবে তিনি ছিলেন তার সিদ্ধান্তে অটল।
দৃঢ়তাকে খুঁটি করে শুরু হল প্রস্তুতি। ২০০২ সালে ইচ্ছের সূচনা হয়ে সিদ্ধিলাভ ২০১০ এ। ২০০৫ সালে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এর জন্য তাকে চালিয়ে যেতে হয়েছে সমানে বাংলায় উত্তর লেখার অনুশীলন। তবে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল আরও একটি। মাতৃভাষার সমৃদ্ধি অন্য কোনো ভাষার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, এটাই সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া।
আসলে চলে আসা রীতিই ধীরে ধীরে পাকাপাকি নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের মনে ধারণা তৈরি হয়ে গেছে যে, বাংলায় পড়ে একটা ‘ইন্টারভিউ ক্র্যাক’ করা ভীষণ চাপের। বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার মানুষের বড় অভাব। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে চলার মানুষ কেউ না কেউ থেকেই যায়। ঠিক তেমনই একজন লড়াকু মানুষ তন্ময় চক্রবর্তী। সমাজে এরকম দৃষ্টান্ত উজ্জ্বল হয়ে থাকুক। এ সাহস অনেক মানুষের অনুপ্রেরণা।
Discussion about this post