ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা পথে নেমেছেন আগেই। যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি-সহ বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা অনলাইন ক্লাসের আড়ালে শিক্ষাক্ষেত্রে সৃষ্ট বৈষম্যের বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছেন। এবার ইচ্ছুক সকল ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে ভ্যাক্সিনেশনের ব্যবস্থা করে ক্যাম্পাস খোলা-সহ নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামল সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের স্বাধীন মঞ্চ ‘ছাত্রছাত্রী পক্ষ’ গড়ে তুলল আন্দোলন।
মহামারীর আঘাত সামলে উঠে বিভিন্ন ক্ষেত্রকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে সরকার। কিন্তু ব্রাত্যই থেকে গিয়েছে শিক্ষাক্ষেত্র। অনলাইনে পঠন-পাঠন চালু থাকলেও, প্রান্তিক ছাত্রছাত্রীদের কাছে তা যেন ‘সোনার পাথর-বাটি’! ফলে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছেন অনলাইন ক্লাসের সুবিধা নিতে না পারা পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যেই অনেকের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ল্যাবরেটরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার অভাবে অসম্পূর্ণই থেকে যাচ্ছে তাঁদের শিক্ষা। সমীক্ষার পর সমীক্ষা ও বারংবার সিদ্ধান্ত বদলের জাঁতাকলে পিষে যাচ্ছে আস্ত একটি প্রজন্ম। তাই নিজেদের কথা এবার নিজেরাই বলার দায়িত্ব নিতে তৈরী হয়েছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের এই মঞ্চ।
মঞ্চের এক সদস্য অম্লানের কথায়, “সরকার স্বাস্থ্যক্ষেত্র, পুলিশ-প্রশাসনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিনেশন নিয়ে উদ্যোগী হলেও, অবহেলিত শিক্ষাক্ষেত্র। স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়লে মানুষ বিপদে পড়বেন, তাই যত শীঘ্র সম্ভব স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণের সিদ্ধান্ত একদম সঠিক। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাব্যবস্থা অচল থাকলে তার প্রভাবেও সমাজে একটা বড়সড় বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। তাই সরকারের উচিত সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকসহ সকল শিক্ষাকর্মীর বিনামূল্যে টিকাকরণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে অবিলম্বে ক্যাম্পাস খোলার ব্যবস্থা করা।”
এই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই মঞ্চের ছাত্রছাত্রীদের তরফে মেল পাঠানো হয়েছে শিক্ষা দফতরে। এবারের কর্মসূচী ছিল গণ-অবস্থান। ৮ সেপ্টেম্বর কলেজ স্ট্রিটে কফি হাউসৈর সামনে শ’দেড়েক ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় এই সভা। দোসর ছিল ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। যোগ দিয়েছিলেন কলকাতা, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, বর্ধমান, ম্যাকাউট, আলিয়া-সহ আরও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও গবেষকরা। সভায় বক্তব্য রাখার পাশাপাশি বিলি হয় লিফলেট। পথচলতি মানুষদের সাথেও কথাবার্তা বলেন তাঁরা। কলকাতায় বড় সভার পাশাপাশি তাঁদের পরিকল্পনা রয়েছে কলকাতার বাইরেও ছোট ছোট কর্মসূচী, লিফলেট, পোস্টারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার। ফলে আশা করা যায়, সরকারও শীঘ্রই ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে উদ্যোগী হবে।
Discussion about this post